আলোচনা শুরু: ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কি তবে শান্তি আসবে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ওমানের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার প্রক্রিয়া সম্ভবত শনিবার থেকে শুরু হতে পারে।

যদি আলোচনা সফল হয়, তবে এটি হবে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির পর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রথম পদক্ষেপ। যদিও ইরান সরাসরি আলোচনার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করেনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আলোচনার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও, তিনি ২০১৫ সালের চুক্তির চেয়ে আরো কঠোর শর্ত যুক্ত করতে চাইছেন। ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পক্ষে।

অন্যদিকে, ইরান চাইছে আলোচনার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞাগুলি শিথিল করতে।

জানা গেছে, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পরমাণু চুক্তি করতে চাইছেন, যেখানে ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা সীমিত করার পরিবর্তে তা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করার কথা বলা হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের পক্ষ থেকে এমনটা মেনে নেওয়া কঠিন হতে পারে, কারণ এটি তাদের আঞ্চলিক ক্ষমতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই আলোচনার বিষয়ে খুব একটা আগ্রহী নন বলে জানা গেছে। তিনি চান, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা হোক, যেমনটা একসময় লিবিয়ার ক্ষেত্রে করা হয়েছিল।

তবে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইসরায়েলের এই ধরনের প্রস্তাবকে কোনো গুরুত্ব দিতে রাজি নয়।

আলোচনার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্প ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এরপর ইরান তাদের পরমাণু কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে এবং উল্লেখযোগ্য হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করতে শুরু করে।

বর্তমানে, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি অনেক বাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করতে চাইছেন।

আলোচনার মূল বিষয়গুলো হলো- ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা। যদি এই আলোচনা সফল না হয়, তাহলে ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

তবে, উভয় পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছাতে আগ্রহী।

এই আলোচনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তাই, এই আলোচনার ফলাফল শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *