ইরানে বোমা: কী হবে? ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ব!

ইরানে সম্ভাব্য মার্কিন সামরিক হামলা: মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকটের আশঙ্কা

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, আর এর মধ্যেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্থাপনায় আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশেষ করে, দেশটির ফোরদো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টের মতো সুরক্ষিত স্থানে হামলার পরিকল্পনা চলছে, যা পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে একটি বৃহত্তর সংঘাতের সূচনা হতে পারে, যা ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের চেয়েও কঠিন হতে পারে। এই সংঘাত দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে এবং এর ফলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

এমনকি, এই ঘটনার জের ধরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আরও জোরদার হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো ঘোষণা না এলেও, দেশটির নীতিনির্ধারকদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কূটনৈতিক সমাধানের পরিবর্তে সামরিক পদক্ষেপের দিকে ঝুঁকছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান ‘প্যান্ডোরার বাক্স’ খুলে দিতে পারে। এর ফলস্বরূপ, পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেয়াদের অবশিষ্ট সময়েও এই সংঘাত চলতে পারে।

ইরানের সামরিক শক্তি এবং কৌশলগত অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই যুদ্ধ সহজ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইরান কোনোভাবেই নতি স্বীকার করবে না।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সামরিক হস্তক্ষেপ হলে তার ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হবে।

ধারণা করা হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে ইরান এই অঞ্চলে তাদের মিত্রদের, বিশেষ করে ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সক্রিয় করতে পারে, যারা অতীতেও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।

অন্যদিকে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ফলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে, ফোরদো প্ল্যান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানলে এর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফোরদো প্ল্যান্টে হামলার ফলে পারমাণবিক চুল্লীর মতো ব্যাপক বিকিরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তবে, ইরানের পক্ষ থেকে এই ধরনের হামলার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দেশটির সামরিক সক্ষমতা এবং প্রতিশোধ নেওয়ার মানসিকতা এই অঞ্চলের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরান হয়তো একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের কৌশল নিতে পারে, যেখানে তারা তাদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি শেষ পর্যন্ত ইরানের উপর সামরিক হামলা চালায়, তবে এর ফলস্বরূপ পুরো অঞ্চলে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *