ওমানের মাটিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চতুর্থ দফা আলোচনা শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান গভীর মতপার্থক্য দূর করাই এই বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে এবং তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে উভয় দেশই আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি হয়েছে। তবে, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনাটি সরাসরি হচ্ছে না, বরং এটি পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইরানের পক্ষ থেকে এই আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। তিনি বৈঠকের শুরুতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানগুলোতে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে, যা আমাদের আলোচনার অন্যতম প্রধান সমস্যা।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা আমাদের সীমা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছি।”
অন্যদিকে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আলোচনার ফলপ্রসূতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আলোচনা যদি ফলপ্রসূ না হয়, তাহলে আমাদের ভিন্ন পথ বেছে নিতে হবে।”
উইটকফ এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁরা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছেন এবং তাঁদের প্রধান প্রত্যাশা হলো, ইরান যেন কোনোভাবেই আর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কার্যক্রম চালাতে না পারে।
“ইরানে আর কখনোই যেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চলতে না পারে। এটিই আমাদের ‘রেড লাইন’,” তিনি উল্লেখ করেন।
তবে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ। দেশটির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা, কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা নয়।
ইরানের কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনাকে “প্রকৃত অর্থে আন্তরিক নয়” বলেও মন্তব্য করেছেন। তাঁদের মতে, ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেওয়া তাদের “নিশ্চিত লাল রেখা”।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই আলোচনার ফল কেবল ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এর প্রভাব পুরো মধ্যপ্রাচ্যে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পড়বে। তাই, আলোচনার প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে এখন সবার দৃষ্টি রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন