চাকরির বাজারে অশনি সংকেত! আপনার জন্য দুঃসংবাদ?

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বাজারে মন্দাভাব, বাড়ছে বেকারত্ব : বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সতর্কবার্তা?

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বর্তমানে কর্মসংস্থান কমে আসার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আগস্ট মাসের প্রকাশিত সরকারি হিসাব অনুযায়ী, নতুন করে মাত্র ২২ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৩ শতাংশে। গত প্রায় চার বছরের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক এবং বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারের এই দুর্বলতা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। গত কয়েক মাসে কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

এমনকি জুন মাসে কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। সাধারণত দেখা যায়, মন্দা পরিস্থিতিতে শিল্পখাতে এর প্রভাব বেশি পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বিভিন্ন শিল্পখাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি এবং শুল্কের পরিবর্তন কর্মসংস্থানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। অনেক শিল্প, বিশেষ করে উৎপাদন খাতে, কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং এর প্রয়োগের কারণে কিছু শিল্পে কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।

অন্যদিকে, কিছু খাতে এখনো কর্মসংস্থান বাড়ছে, তবে তা খুবই সীমিত। স্বাস্থ্যখাতে এখনো কর্মী নিয়োগ চলছে, তবে এটি বাজারের একটি ক্ষুদ্র অংশ।

এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক শ্রেণির একটি বড় অংশ নতুন কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিকদের মধ্যে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি। এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫ শতাংশে, যা ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের পর সর্বোচ্চ।

সাধারণত, শ্রমবাজার দুর্বল হলে শ্বেতাঙ্গ শ্রমিকদের তুলনায় কৃষ্ণাঙ্গ শ্রমিকদের বেকারত্ব বেশি বাড়ে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে বাণিজ্য নীতি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং নীতিগত অনিশ্চয়তাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও বেকারত্বের হার এখনো ‘স্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি বাড়তে থাকলে তা উদ্বেগের কারণ হবে।

এমন পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে অর্থের পরিমাণ কমতে শুরু করবে, যা ব্যয়ের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং এর ফলস্বরূপ, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ চাকরি হারাতে পারে।

তবে, এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসন্ন। বাণিজ্য এবং অভিবাসন নীতির কারণে সৃষ্ট কিছু কাঠামোগত এবং চক্রাকার বিষয় এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

অর্থনীতিবিদদের ধারণা, সুদের হার কমানো হলে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়লে কর্মসংস্থান আবার বাড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়বে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের দিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *