মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ-আতঙ্ক: সবাই কি অনিরাপদ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিন্ন মতাবলম্বীদের উপর দমন-পীড়ন: মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অভিবাসন-সংক্রান্ত জটিলতা এবং ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেককে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, এমন অভিযোগ উঠেছে।

এই ঘটনাগুলো বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এল সালভাদরের নাগরিক কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তটি ছিল একটি প্রশাসনিক ত্রুটি। এই ভুলের জন্য তাকে এল সালভাদরের কুখ্যাত কারাগারে বন্দী করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, বিচারকের এখতিয়ার নিয়ে তাদের সন্দেহ রয়েছে।

এছাড়াও, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার হচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তুফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুমিসা ওজতুর্ককে সম্প্রতি অপহরণ করা হয়।

তার বিরুদ্ধে হামাসকে সমর্থন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। রুমিসা ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতির সমালোচনা করে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন।

এই ঘটনার পর তার ভিসা বাতিল করা হয়।

শুধু রুমিসা নন, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মাহমুদ খলিলকেও নিউ ইয়র্ক সিটি থেকে তুলে নেওয়া হয় এবং পরে তাকেও বিতাড়িত করা হয়।

এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও ঘোষণা করেন, হামাসকে সমর্থনকারীদের ভিসা ও গ্রিন কার্ড বাতিল করা হবে এবং তাদের বিতাড়িত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের শিকার হয়েছেন আরও অনেকে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী, রঞ্জনি শ্রীনিবাসন, যিনি সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলের সমালোচনা করেছিলেন, তাকেও দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গবেষক বাদার খান সুরিকেও অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি, কোরিয়ান বংশোদ্ভূত ইউনসো চং, যিনি ছোটবেলা থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাকেও ফ্যালেস্টাইনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে বিতাড়িত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘনই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

তথ্যসূত্র: বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *