আতঙ্কের অবসান? ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার ফিরে আসা!

শেয়ার বাজারের উত্থান-পতন: অস্থির বিশ্বে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এপ্রিল মাসের শুরুতে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়, তখন বাজারের পরিস্থিতি বেশ নাজুক হয়ে পড়েছিল।

বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি সরিয়ে নিতে শুরু করেন, যার ফলস্বরূপ শেয়ার বাজার দ্রুত নিচে নামতে থাকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, অনেকেই একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দার (recession) আশঙ্কা করতে শুরু করেছিলেন।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি পরিবর্তনে বাজারের চিত্র দ্রুত পাল্টাতে শুরু করে। চীন সহ বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক (tariff) কমানোর ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসে।

এর ফলস্বরূপ, শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়ায় এবং দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। এপ্রিল মাসের শুরু থেকে, S&P 500 সূচক প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বৃদ্ধি লাভ করে। যা বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে প্রায় আট শত ট্রিলিয়ন টাকার সমান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের এই দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি এনেছে। তবে, এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

একদিকে যেমন শুল্ক কমানো হয়েছে, তেমনি এখনো অনেক পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বিদ্যমান। বর্তমানে গড় কার্যকর শুল্কের হার ১৭.৮ শতাংশে দাঁড়িয়ে আছে, যা ১৯৩৪ সালের পর সর্বোচ্চ।

এমনকি, চীনের উপর এখনো ৩০ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে, যা বাণিজ্যকে স্বাভাবিক করতে বাধা সৃষ্টি করছে এবং পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, যদিও মন্দার আশঙ্কা কিছুটা কমেছে, তবে ঝুঁকি এখনো কাটেনি। জেপি মর্গান চেজের অর্থনীতিবিদদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার সম্ভাবনা এখন ৫০ শতাংশের নিচে, যা এপ্রিলের শুরুতে ছিল ৬০ শতাংশ।

গোল্ডম্যান স্যাকস-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, মন্দা আসার সম্ভাবনা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশে।

বাজারের এই উত্থান-পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। বাজারের এই দ্রুত পরিবর্তন বুঝিয়ে দেয়, এখানে টিকে থাকতে হলে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।

বাজারের এই অস্থিরতা প্রমাণ করে, শেয়ার বাজারের গতিবিধি অনুমান করা কঠিন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের এই পুনরুদ্ধার সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি এখনো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ভবিষ্যতে এই নীতির পরিবর্তন বাজারের গতিপথকে নতুন দিকে মোড় দিতে পারে।

শেয়ার বাজারের এই উত্থান-পতনের মূল কারণগুলো হলো— রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, বাণিজ্য নীতি এবং বিনিয়োগকারীদের মানসিকতা। তাই, বিনিয়োগকারীদের উচিত বাজারের পরিস্থিতি সম্পর্কে সবসময় অবগত থাকা এবং তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *