মার্কিন সামরিক বাহিনীতে চরমপন্থার উদ্বেগ, সেনা সদস্যের নব্য-নাৎসি গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন জানানো নিয়ে একটি খবর প্রকাশ হয়েছে। এই ঘটনায় মার্কিন সামরিক বাহিনীতে চরমপন্থা দমনে কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর একজন সক্রিয় সদস্যের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি নব্য-নাৎসি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন জানানো নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, ওই সেনা সদস্য ‘দ্য বেস’ নামের একটি গোষ্ঠীকে অনুসরণ করেন, যা একটি সহিংস নব্য-নাৎসি সংগঠন হিসেবে পরিচিত।
এই গোষ্ঠীটি সৈন্যদের মধ্যে তাদের সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা করে এবং একটি তথাকথিত ‘জাতিগত যুদ্ধ’-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন ঘটনা মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের (পেন্টাগন) চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার প্রমাণ।
সামরিক বাহিনীর ওই সদস্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা চরমপন্থী কার্যক্রমসহ ক্ষতিকর আচরণ ও কার্যকলাপ কোনোভাবেই বরদাস্ত করব না।”
পাশাপাশি, চরমপন্থী কার্যক্রমের ওপর নজরদারি এবং পেন্টাগনের পরিদর্শকের কাছে তথ্য জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দ্য বেস’-এর মতো চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো তাদের সদস্য সংগ্রহের জন্য বিশেষভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। কারণ, সামরিক প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
অতীতেও দেখা গেছে, বিভিন্ন চরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের যোগসূত্র ছিল। যেমন, ১৯৯৫ সালের ওকলাহোমা সিটি বোমা হামলায় জড়িত ব্যক্তি ছিলেন একজন ডেজার্ট স্টর্মের অভিজ্ঞ সৈনিক। এছাড়া, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে ১৫১ জনের বেশি ব্যক্তির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক বাহিনীতে চরমপন্থার বিস্তার একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এর ফলে সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে, মার্কিন সামরিক বাহিনী অভ্যন্তরীণ চরমপন্থা মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, সমালোচকরা বলছেন, চরমপন্থা দমনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, চরমপন্থা একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং এর বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।