১ বিলিয়ন ডলারের বেশি! হাউছিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান কতটা সফল?

মার্কিন সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে, যা ইতোমধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে এই ব্যয় সত্ত্বেও, জঙ্গিগোষ্ঠীর সক্ষমতা ধ্বংসের ক্ষেত্রে অভিযানটির প্রভাব সীমিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ই মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেমন- জেএএসএম (JASSM) বা দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং টমাহক (Tomahawk) ক্ষেপণাস্ত্র।

এছাড়াও, এই অভিযানে বি-২ বোমারু বিমান ও অন্যান্য যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অতিরিক্ত বিমানবাহী রণতরী এবং যুদ্ধবিমান বহর মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হতে পারে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযানের জন্য কংগ্রেসের কাছে অতিরিক্ত অর্থ চেয়ে আবেদন করতে হতে পারে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরকে। তবে এই বিষয়ে এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না, কারণ ইতোমধ্যেই এই অভিযানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

এমনকি ভাইস প্রেসিডেন্টও এই অভিযানকে ভুল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পেন্টাগন (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর) আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানায়নি যে, তাদের এই সামরিক অভিযানের ফলে হুতি বিদ্রোহীদের উপর কী প্রভাব পড়েছে। তবে সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহীদের শীর্ষস্থানীয় কয়েক জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে এবং তাদের কিছু সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে।

কিন্তু একইসাথে তারা স্বীকার করেছেন যে, হুতি বিদ্রোহীরা তাদের বাঙ্কারগুলি শক্তিশালী করতে এবং ভূগর্ভে অস্ত্র মজুত করতে এখনো সক্ষম হয়েছে। এর ফলে, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা এবং মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করার মতো ঘটনাগুলো এখনো অব্যাহত রয়েছে।

অভিযান পরিচালনাকারীদের মতে, হুতি বিদ্রোহীদের হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করতে ব্যাপক পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হচ্ছে। এর ফলে, সামরিক সক্ষমতা এবং অস্ত্র ভাণ্ডারে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

অন্যদিকে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর এই ব্যাপক অভিযানের কারণে ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের কিছু কর্মকর্তাও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। কারণ, হুতি বিদ্রোহীদের দমনের জন্য যে পরিমাণ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, তা চীন-এর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের সময় সামরিক প্রস্তুতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে, কোনো কোনো সামরিক কর্মকর্তার মতে, এই উদ্বেগের কারণ বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তাদের মতে, প্রতিটি অভিযানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে।

বর্তমানে, হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *