আতঙ্কের সৃষ্টি! মার্কিন হামলায় নিহত, মাদক পাচার রুখতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ?

মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিতর্কিত অভিযানে ক্যারিবিয়ান সাগরে একটি নৌকায় হামলা, নিহত ৩।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বিতর্কিত এক অভিযানে ক্যারিবিয়ান সাগরে মাদক পাচারকারী সন্দেহে একটি নৌকায় হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে শুরু হওয়া এই সামরিক অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা চলছে, যা সম্ভবত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রধান, যিনি সাধারণত সেক্রেটারি অফ ওয়ার বা যুদ্ধ সচিব হিসেবে পরিচিত, সম্প্রতি এক বিবৃতিতে এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো এই হামলায় একটি ‘নার্কো-সন্ত্রাসী’ দলকে লক্ষ্য করা হয়েছিল। নিহতদের সবাই নৌকায় ছিল এবং তারা মাদক দ্রব্য বহন করছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এই মাসের শুরুতে চালানো এই অভিযানটি ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে চালানো ১৫তম সামরিক অভিযান। এর আগে, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ক্যারিবিয়ান সাগরে চালানো বিভিন্ন হামলায় অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

মার্কিন কর্তৃপক্ষের দাবি, নিহত ব্যক্তিরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তারা একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য। তবে, এই অভিযানের আইনগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং অবিলম্বে তা বন্ধ করা উচিত।

মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্রেট দলের সদস্যরাও এই অভিযানগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ না করে প্রশাসন একতরফাভাবে কাজ করছে। সিনেটের প্রভাবশালী নেতারাও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনের কাছে জবাবদিহি চেয়েছেন।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রশাসন দাবি করছে, তারা একটি গোপন আইনি মতামতের ভিত্তিতে কাজ করছে, যা তাদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দেয়। প্রশাসনের মতে, মাদক পাচারকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।

ক্যারিবিয়ান সাগরে সম্প্রতি চালানো এই হামলাটি অক্টোবর মাসের পর প্রথম। আগে এই অঞ্চলে অভিযান চালালেও, পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মনোযোগ পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে সরিয়ে নেয়, যেখানে তারা কোকেন পাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অভিযান জোরদার করেছে।

তবে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ধরনের সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং বেসামরিক মানুষের জীবনহানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, কোনো প্রমাণ ছাড়াই নির্বিচারে মানুষ হত্যার এই ঘটনাগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *