ইরান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা বর্ষণের প্রস্তুতি! বাড়ছে উত্তেজনা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনা করার প্রেক্ষাপটে কৌশলগত বোমারু বিমান, বি-২ মোতায়েন করেছে। শুক্রবার রাতে মিসৌরির হোয়াইটম্যান এয়ার ফোর্স বেস থেকে বিমানগুলো উড্ডয়ন করে পশ্চিম দিকে যাত্রা শুরু করে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর সম্ভাব্য বিমান হামলা সহ বিভিন্ন সামরিক বিকল্প পর্যালোচনা করছেন।

যদিও এখন পর্যন্ত ইরান আক্রমণের উদ্দেশ্যে কোনো অভিযান শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়নি, তবে সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ ক্ষমতা প্রদর্শনের একটি কৌশল হতে পারে। বিমানের এই মোতায়েনকে ইরানের প্রতি সতর্কবার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

সামরিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বি-২ বোমারু বিমানগুলো ‘ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (Massive Ordnance Penetrator) বহন করতে সক্ষম। এই বিশেষ বোমা, যা “bunker buster” নামেও পরিচিত, ইরানের ভূগর্ভস্থ ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।

প্রতিটি বি-২ বোমারু বিমান দুটি করে এই বোমা বহন করতে পারে, যার প্রতিটির ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড। ট্রাম্প গত এক সপ্তাহ ধরে হোয়াইট হাউসের ‘সিচুয়েশন রুমে’ বসে আক্রমণের পরিকল্পনা পর্যালোচনা করেছেন এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তার সম্ভবত দুই সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

খবর অনুযায়ী, শনিবার এবং রবিবার সন্ধ্যায় ওভাল অফিসে জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের কথা রয়েছে। আকাশ পথে বিমানের জ্বালানি সরবরাহের জন্য ওকলাহোমার অলটাস থেকে আটটি মার্কিন এয়ার ফোর্স কেসি-১৩৫ স্টার্ট ট্যাংকার উড্ডয়ন করে।

ক্যানসাসের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বিমানগুলো MYTEE11 FLT এবং MYTEE21 FLT নামে পরিচিত দুটি দলকে জ্বালানি সরবরাহ করে। পূর্বে বি-২ বোমারু বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের সঙ্গে MYTEE কল সাইন যুক্ত ছিল।

ক্যালিফোর্নিয়া উপকূল এবং হাওয়াইয়ের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বোমারু বিমানগুলোতে পুনরায় জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। উপগ্রহ চিত্র থেকে জানা গেছে, ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় ছয়টি কেসি-১৩৫ রিফুয়েলিং বিমান মোতায়েন করা হয়েছে, যা ইরানের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় বোমারু বিমানগুলোর জ্বালানি সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে, যা বিশ্ব বাজারে তেলের দামে প্রভাব ফেলতে পারে। একইসঙ্গে, এর ফলে ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও নাজুক হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *