মার্কিন-রুশ বন্দী বিনিময়ে মুক্তি, অবশেষে ফিরছেন ক্সেনিয়া!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে বন্দী বিনিময়ের ফলে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে (United Arab Emirates) সম্প্রতি এই বিনিময় সম্পন্ন হয়, যেখানে উভয় দেশ তাদের হেফাজতে থাকা কয়েকজন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে।

এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো, রাশিয়ার হাতে আটক হওয়া মার্কিন-রুশ দ্বৈত নাগরিক, প্রাক্তন ব্যালে নৃত্যশিল্পী ক্সেনিয়া কারেলিনার মুক্তি।

জানা গেছে, গত বছর কারেলিনাকে রাশিয়ায় আটক করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ইউক্রেনকে সহায়তাকারী একটি মার্কিন দাতব্য সংস্থাকে ৫২ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছেন, যা রাশিয়ার দৃষ্টিতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

যদিও মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে মনে করে। কারেলিনার মুক্তির পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানান, কারেলিনা এখন যুক্তরাষ্ট্রের পথে রয়েছেন এবং প্রেসিডেন্ট তার মুক্তির জন্য কাজ করেছেন।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জার্মানি-রুশ ব্যবসায়ী আর্থার পেত্রভকে মুক্তি দিয়েছে। পেত্রভের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অবৈধভাবে রাশিয়ায় সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ পাচার করছিলেন।

২০১৪ সালে সাইপ্রাসে (Cyprus) তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে তারের জালিয়াতি (wire fraud) এবং অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়েছিল।

এই বিনিময় প্রক্রিয়াটি উভয় দেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (Central Intelligence Agency – CIA) এর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এবং একজন শীর্ষস্থানীয় রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবুধাবিতে (Abu Dhabi) আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

র্যাটক্লিফ বলেন, “আজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়া থেকে আরও একজন ভুলভাবে আটককৃত আমেরিকানকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন।

জানুয়ারি মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চ-প্রোফাইলের বন্দী বিনিময়। এর আগে গত আগস্ট মাসেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ধরনের বিনিময়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি এর আগে আমেরিকান শিক্ষক মার্ক ফোগেলের মুক্তি নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন।

তবে, ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। যদিও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছে, তবুও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে এখনো সফল হননি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি কৃষ্ণ সাগরে (Black Sea) আংশিক যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে (Istanbul) যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের মধ্যে দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, এই বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *