যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা শুরু।
রিয়াদ, সৌদি আরব থেকে: ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা সৌদি আরবে বৈঠকে বসেছেন।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সীমিত যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, যার মাধ্যমে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পথ খুলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া সূত্রগুলো জানাচ্ছে, উভয় দেশ প্রাথমিকভাবে এক মাসের জন্য ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরই এমন সিদ্ধান্ত হয়।
তবে, এই যুদ্ধবিরতি কত দ্রুত কার্যকর হবে, এবং এটি শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি হাসপাতাল, সেতু এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
মার্কিন কর্মকর্তারা রবিবার রাতে ইউক্রেনের সঙ্গে এবং সোমবার রাশিয়ার সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন।
রিয়াদের একটি হোটেলে এই আলোচনাগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, ব্ল্যাক সি-তে জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও উভয়পক্ষের মধ্যে পৃথক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা।
এই সময়ের মধ্যে আমরা একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করব।
আমরা খুব বেশি দূরে নেই।”
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় এবং মার্কিন প্রতিনিধি দল জ্বালানি কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রক্ষার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রবিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে তার দেশের প্রতিনিধি দল “সম্পূর্ণ গঠনমূলকভাবে” কাজ করেছে এবং আলোচনা “খুবই ফলপ্রসূ” হয়েছে।
বৈঠকের আগে, ট্রাম্পের ব্যক্তিগত দূত হিসেবে পরিচিত স্টিভ উইটকফের কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি রাশিয়ার চারটি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত গণভোটকে বৈধতা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দিত হয়েছে।
উইটকফ বলেছেন, “ওই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ রাশিয়ার অধীনে থাকতে চায়।”
উল্লেখ্য, লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে অনুষ্ঠিত গণভোটকে অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে রাশিয়া কিয়েভে ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে।
বর্তমানে, শান্তি চুক্তির শর্ত নিয়ে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য রয়েছে।
রাশিয়া তাদের কিছু শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে সব ধরনের সামরিক সহায়তা বন্ধ করা, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর আকার সীমিত করা এবং ২০১৪ সালের গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া চারটি অঞ্চলের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া।
অন্যদিকে, ইউক্রেন রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তির বিষয়ে সতর্ক রয়েছে।
তাদের আশঙ্কা, অতীতে রাশিয়া তাদের প্রতিশ্রুতি রাখেনি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।