যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের একটি জাতিগত মিলিশিয়া গোষ্ঠীর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যারা সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। সোমবার মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে কারেন ন্যাশনাল আর্মি (KNA) এবং এর প্রধান কর্নেল সা চিট থু সহ তার দুই ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার, সীমান্ত পার করে চোরাচালান এবং অনলাইন প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই মিলিশিয়া গোষ্ঠী সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের ক্ষতিসাধন করেছে। ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি মাইকেল ফলকেন্টার বলেছেন, “কেএনএর মতো সাইবার জালিয়াতি চক্রগুলো অপরাধীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনে সহায়তা করে এবং ভুক্তভোগীদের সঞ্চয় ও নিরাপত্তা কেড়ে নেয়।”
অভিযোগ অস্বীকার করে কেএনএ জানিয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য আঞ্চলিক উন্নয়ন, সাইবার জালিয়াতি নয়। কেএনএ মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাইং মাউং জাও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা দুর্বল দেশের উপর একটি শক্তিশালী দেশের ইচ্ছাকৃত চাপ প্রয়োগের শামিল। তিনি আরও বলেন, “তারা এটা করছে কারণ তারা পারে।”
মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে এই ধরনের মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কেএনএ’র নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শ্বে কককো এবং মিয়ানমারের কায়িন রাজ্যের (যা কারেন রাজ্য নামেও পরিচিত) কিছু এলাকা, যা থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী। এই এলাকাগুলো অপরাধ চক্রের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত, যেখানে হাজার হাজার মানুষকে অনলাইন প্রতারণার কাজে বাধ্য করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কেএনএ’র নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোতে অনলাইন প্রতারণার অনেকগুলো ঘাঁটি রয়েছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাইং মাউং জাও স্বীকার করেছেন, তাদের গোষ্ঠী কিছু ব্যবসার কাছে জমি ভাড়া দিয়েছে যেখানে এই ধরনের প্রতারণা কেন্দ্রগুলো অবস্থিত। তিনি জানান, কেএনএ মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে মিলে প্রতারণা চক্রে জড়িত বিদেশি কর্মীদের ফেরত পাঠানোর কাজ করছে।
ফেব্রুয়ারি মাস থেকে থাইল্যান্ডের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে ৮,৫৭৫ জন কর্মীর মধ্যে ৭,৪৫৪ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখনও ১০,০০০ এর বেশি মানুষকে শনাক্ত করার কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর কায়িন রাজ্যে সশস্ত্র সংঘাত বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস