গাজায় সময় কাটানো ভিসা প্রার্থীদের উপর যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজর!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভিসা আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা অতীতে গাজা উপত্যকায় ভ্রমণ করেছেন। পররাষ্ট্র দপ্তর এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে।

মূলত, ২০০৭ সালের ১লা জানুয়ারি বা তারপর থেকে যারা গাজায় গিয়েছেন, তাদের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া এখন আরও কঠিন হতে চলেছে।

এই নতুন নিয়মের আওতায় পড়বেন অভিবাসী ও অ-অভিবাসী ভিসার জন্য আবেদনকারীরা, যার মধ্যে শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের মতো বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ অন্তর্ভুক্ত।

শুধু তাই নয়, যারা কোনো সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন অথবা কোনো কূটনৈতিক মিশনে কাজ করেছেন, এমনকি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কর্মী বা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন, তাদেরও এই স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।

যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো আবেদনকারীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তার ভিসা আবেদনটি আরও বিস্তারিত পর্যালোচনার জন্য বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কাছে পাঠানো হবে।

এই সংস্থাগুলো আবেদনকারীর জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্ভাবনা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মারকো রুবিও’র দপ্তর এরই মধ্যে চলতি বছরে ৩০০ জনের বেশি ভিসা বাতিল করেছে।

যাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

ইসরায়েলের গাজায় চালানো অভিযানের সমালোচনা করায় তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।

যদিও মার্কিন সংবিধান সেখানে থাকা যে কারো মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়।

এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, বিশেষ করে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর যেখানে বড় ধরনের প্রতিবাদ হয়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ দেখা গেছে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু নীতি পরিবর্তনে রাজি না হওয়ায় তাদের জন্য ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ফেডারেল তহবিল স্থগিত করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগের (affirmative action) বিলুপ্তি, এবং এমন শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা যারা আমেরিকান মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ইহুদিবিদ্বেষের (anti-Semitism) অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হোস্ট করার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, কারণ তাদের “চরমপন্থী আদর্শ” এবং “বিদেশি ভিসা-ধারী বিক্ষোভকারী ও শিক্ষকদের সমর্থন” রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, যারা “ইহুদিবিদ্বেষী ঘৃণা” ছড়াচ্ছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে, গাজায় যাওয়া কোনো ব্যক্তির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, এই ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ভিসা প্রক্রিয়াকরণে আরও কঠোরতা আনতে পারে, যা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *