মার্কিন সিনেট সম্প্রতি এয়ার ফোর্স জেনারেল ড্যান কেইনকে জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান হিসেবে অনুমোদন করেছে। শুক্রবার গভীর রাতে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ৬০-২৫ ভোটে তাঁর মনোনয়ন নিশ্চিত হয়।
এই পদে আসীন হওয়ার আগে কেইনকে বেশ কিছু বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়েছে, কারণ তিনি ১৯৮৬ সালের একটি আইনে নির্ধারিত যোগ্যতার মাপকাঠি পূরণ করেন না। তবে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এই নিয়ম শিথিল করতে পারেন।
জেনারেল কেইনের মনোনয়ন পাওয়ার প্রেক্ষাপট বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে, বিদায়ী চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস ‘সি.কিউ.’ ব্রাউনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ব্রাউন ছিলেন এই পদে আসীন হওয়া দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ জেনারেল।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর সামরিক নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই তাঁকে সরানো হয়, যেখানে মূলত ডাইভারসিটি ও ইক্যুইটি’র মতো বিষয়গুলির সমর্থক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেনেটে শুনানিতে কেইন জানান, তিনি সব সময় নির্দলীয়ভাবে কাজ করবেন এবং প্রেসিডেন্টকে সঠিক পরামর্শ দেবেন। মিশিগান থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিসা স্লটকিন তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, যদি এমন কোনো নির্দেশ আসে যা সম্ভবত অবৈধ, সেক্ষেত্রে তিনি প্রতিবাদ জানাবেন কিনা।
জবাবে কেইন জানান, এই পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ জানানোই তাঁর কর্তব্য হবে।
তবে, কেইনকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কারণ তিনি জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান পদের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করেন না। ১৯৮৬ সালের আইন অনুযায়ী, এই পদে আসীন হতে হলে কোনো সামরিক কমান্ডার অথবা সার্ভিস চিফ পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
কেইন এর আগে সিআইএ-এর সামরিক বিষয়ক সহযোগী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এফ-১৬ যুদ্ধ বিমানের পাইলট হিসেবে ১৫০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যুদ্ধ মিশনে অংশ নিয়েছেন। যদিও তাঁর এই অভিজ্ঞতা রয়েছে, তবুও আইন অনুযায়ী তিনি সরাসরি এই পদের জন্য যোগ্য ছিলেন না।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কেইনের সম্পর্ক বেশ পুরোনো। জানা যায়, তাঁদের মধ্যে প্রথম পরিচয় হয় ইরাক সফরের সময়। এই নিয়োগের মাধ্যমে মার্কিন সামরিক বাহিনীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এলো, যেখানে নেতৃত্ব পরিবর্তনের পাশাপাশি নীতিগত কিছু পরিবর্তনেরও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা যায়, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির প্রধানসহ আরও অনেক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা