মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকার অচলাবস্থার কারণে খাদ্য সহায়তার অভাবে ৪ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে স্বাস্থ্যখাত বিষয়ক নীতিগত মতপার্থক্যের জের ধরে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যা আসন্ন নভেম্বরের শুরু থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম, সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন অ্যাসিস্টেন্স প্রোগ্রাম (SNAP)-এর সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই এখন সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ।
জানা গেছে, রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট উভয় দলের আইনপ্রণেতারাই এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। সিনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার এবং হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফ্রিস সরকারের কার্যক্রম পুনরায় চালুর জন্য স্বাস্থ্যখাত বিষয়ক তাদের দাবি পূরণ করার ওপর জোর দিচ্ছেন।
তারা সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করে বলছেন, আলোচনার টেবিলে না বসে তিনি বরং বিদেশ সফরে বেশি আগ্রহী।
ভেরমন্টের সিনেটর পিটার ওয়েলচ সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এসবের জন্য ট্রাম্পই দায়ী। তিনি কোনো আলোচনায় বসতে রাজি নন।” ভার্জিনিয়ার সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার ট্রাম্পের এই বিদেশ সফরকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, “ট্রাম্পের উচিত দেশের কথা সবার আগে ভাবা এবং আমাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করা।”
ডেমোক্র্যাটরা তাদের অবস্থানে অনড় থেকে অভিযোগ করেছেন, খাদ্য সহায়তার এই গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামটি বন্ধ হওয়ার পেছনে ট্রাম্প প্রশাসন দায়ী। তাদের মতে, সরকারের হাতে এখনো এই প্রোগ্রামটি চালানোর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ রয়েছে।
তারা আরও বলছেন, খাদ্য সহায়তা বন্ধ করার পরিবর্তে ট্রাম্প প্রশাসন আর্জেন্টিনার জন্য প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিতে চাইছে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও এই খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিপক্ষে। তারা মনে করেন, এটি দরিদ্র আমেরিকানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কানসাসের সিনেটর রজার মার্শাল, যিনি একজন চিকিৎসকও, জানিয়েছেন, এই প্রোগ্রামটি অনেক গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের জন্য অপরিহার্য। তিনি এটিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সরকারের অচলাবস্থা চলতে থাকলে তারা খাদ্য সহায়তা প্রোগ্রামের জন্য তাদের সংরক্ষিত ৬ বিলিয়ন ডলারের জরুরি তহবিল ব্যবহার করবে না।
নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে এই খাদ্য সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে দেশটির প্রায় ৪ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে।
তবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, সবাই ভালো থাকবে। যদিও তার এই মন্তব্য সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তথ্যসূত্র: সিএনএন