আতঙ্ক! যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া, কী বলছে উত্তর কোরিয়া?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মধ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে।

‘ফ্রিডম এজ’ নামের এই নৌ ও বিমান মহড়াটি উত্তর কোরিয়ার কাছাকাছি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা প্রতিবেশী দেশটির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো সমুদ্র, আকাশ এবং সাইবার স্পেসে দেশগুলোর সম্মিলিত সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

তাদের মতে, উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির মোকাবিলায় এটি জরুরি। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের বোন কিম ইয়ো-জং এই মহড়াকে ‘ক্ষমতার বেপরোয়া প্রদর্শনী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি একে কোরীয় উপদ্বীপের আশেপাশে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলার শামিল বলেও মন্তব্য করেছেন।

আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফ্রিডম এজ’ মহড়াটি দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপের কাছে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এটি চলতি সপ্তাহের শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।

এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং সরঞ্জামাদি অংশ নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের সামরিক মহড়া উত্তর কোরিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ।

কারণ এর ফলে তারা নিজেদের নিরাপত্তা দুর্বল মনে করতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

অতীতেও দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক মহড়ার জবাবে উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে রাজি নয়।

তারা বরং যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিহত করতে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে।

সম্প্রতি কিম জং-উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ করছেন।

এছাড়াও, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একটি সামরিক কুচকাওয়াজেও অংশ নিয়েছিলেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।

এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি এবং এর প্রতিক্রিয়ায় মিত্র দেশগুলোর সামরিক তৎপরতা—উভয়ই একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করছে।

এর ফলে কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে, যা শুধু ওই অঞ্চলের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রেও উদ্বেগের কারণ।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *