মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জনস্বাস্থ্য খাতে ১১ বিলিয়ন ডলারের তহবিল কর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশটির ২৩টি রাজ্য এবং ডিসি’র (ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া) স্বাস্থ্য দপ্তর মামলা করেছে। মামলায় মার্কিন স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ (Department of Health and Human Services – HHS) এবং স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাজ্যগুলোর অভিযোগ, এই আকস্মিক পদক্ষেপ ‘ক্ষতিকর’ এবং ‘বেআইনি’। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এইচএইচএস অপ্রত্যাশিতভাবে টিকাদান, সংক্রামক রোগ শনাক্তকরণ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং মাদকাসক্তি বিষয়ক সেবাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল বন্ধ করে দেয়।
ফেডারেল সরকার এই তহবিল কর্তনের কারণ হিসেবে জানায়, কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় এই অর্থগুলোর বিশেষ প্রয়োজন ছিল, যা এখন আর নেই। আদালতে দায়ের করা এই মামলার যুক্তি অনুযায়ী, তহবিল কমানোর এই সিদ্ধান্ত মূলত ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।
রাজ্যগুলোর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, এই অর্থ কোভিড-১৯ এর বাইরেও দীর্ঘমেয়াদী জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা মেটানোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। কংগ্রেসও এই তহবিল সরাসরি বন্ধ করার কোনো নির্দেশ দেয়নি।
মামলার বাদী রাজ্যগুলোর মতে, এই তহবিল বন্ধের ফলে তাদের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে এবং বহু কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের মতে, জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্যখাতে অর্থ হ্রাস করা হলে মাদকাসক্তি সংকট মোকাবিলায় অগ্রগতি ব্যাহত হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
হাসপাতালগুলোতেও রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, এইচএইচএস প্রশাসনিক কার্যক্রম বিষয়ক ফেডারেল আইন (Administrative Procedure Act) লঙ্ঘন করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, তহবিল বন্ধের আগে রাজ্যগুলোকে কোনো ধরণের নোটিশ দেওয়া হয়নি এবং তাদের চাহিদাকেও বিবেচনা করা হয়নি। বর্তমানে, এই মামলার শুনানির মাধ্যমে জানা যাবে, জনস্বাস্থ্য খাতে এত বড় অঙ্কের তহবিল কর্তনের সিদ্ধান্ত কতটুকু সঠিক ছিল।
একইসাথে, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর স্বাস্থ্যখাতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, সে বিষয়েও ধারণা পাওয়া যাবে। তথ্য সূত্র: The Guardian