যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস ও দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েকদিনের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন বহু মানুষ। সোমবার দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে এই ঝড়।
মিসিসিপিতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে জনজীবন। টাইলারটাউনে গাছপালা উপড়ে গেছে, বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টেট রিভস নিশ্চিত করেছেন যে ঝড়ে ৬ জন মারা গেছেন এবং দুই শতাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
অন্যদিকে, টেক্সাস ও ওকলাহোমার বিভিন্ন স্থানে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ওকলাহোমাতে ১৩০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে, যেখানে প্রায় ৪০০ বাড়ি হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, না হয় সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। ওকলাহোমার গভর্নর কেভিন স্টিট জানিয়েছেন, দাবানল ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রাজ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। টেক্সাসেও দাবানলের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অনেককে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
কানসাসে একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০টি গাড়ির সংঘর্ষ হয়, যেখানে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে গিয়েছিল। এই দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। আলাবামার মধ্যাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ৮২ বছর বয়সী নারীও ছিলেন। আরকানসাসেও ঝড়ের তাণ্ডবে তিনজন নিহত হয়েছেন। সেখানকার উদ্ধারকাজে সহায়তা করার জন্য ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (সংশ্লিষ্ট সময়ের প্রেসিডেন্ট) জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং রাজ্য ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধারকাজে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
দুর্যোগপূর্ণ এই আবহাওয়ার কারণে ফ্লোরিডা থেকে নিউ জার্সি পর্যন্ত শক্তিশালী বাতাস বইছে। নিউইয়র্ক এবং নিউ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, উত্তর ক্যারোলিনা এবং ভার্জিনিয়ার কিছু অংশে ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১১৩ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মার্চ মাসে এমন তীব্র আবহাওয়া প্রায়ই দেখা যায়, তবে এবারের পরিস্থিতি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা