মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের উপর বোমা হামলার ঘটনায় বিভক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বোমা হামলা চালানো হয়, যা ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে – কেউ হামলার পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে, আবার কারো মধ্যে যুদ্ধ আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ৩০ বছর বয়সী লেটন টলহোয়াইটম্যানের মতে, ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলার স্মৃতি এখনও তাজা। তিনি মনে করেন, ইরানের বিরুদ্ধে এই সামরিক পদক্ষেপ সম্ভবত তেমন ফলপ্রসূ হবে না।
খাদ্য সরবরাহকারী একটি কোম্পানির এই কর্মচারী সাধারণত লিবারেল পার্টির সমর্থক, তবে গত বছর তিনি ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছিলেন।
অন্যদিকে, দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের হোয়াইটম্যান বিমানঘাঁটির কাছে বসবাসকারী অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর সদস্য কেন স্লোবাউগ এই হামলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসার কোনো আগ্রহ নেই এবং তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া উচিত নয়।
তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ নেওয়াটা জরুরি ছিল।
ডেলওয়্যার অঙ্গরাজ্যের রেহোবোথ বিচের ১৮ বছর বয়সী অ্যান্ড্রু উইলিয়ামসও এই হামলার সময় নিয়ে কিছুটা বিস্মিত। তবে তিনি মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হলে তা প্রতিরোধ করা উচিত।
তবে, অনেকে এই ঘটনার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ফ্লোরিডার ডেভি এলাকার বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী কেন্ট বেরাম মনে করেন, কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়াই ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ঠিক হয়নি।
তিনি বলেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। বেরামের মতে, এই মুহূর্তে এমন একটি পদক্ষেপ নেওয়া হতাশাজনক, যেখানে কয়েক বছর আগেই আফগানিস্তানে যুদ্ধ শেষ হয়েছে।
বিলিংসে বসবাসকারী ৬৯ বছর বয়সী রবার্ট ওয়ালেট মনে করেন, ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানাতে সঠিক কাজটি করেছেন। তিনি মনে করেন, ইরান ‘খুবই খারাপ লোক’।
তবে তিনি এটাও মনে করেন, ট্রাম্পের পক্ষে ইরানের সঙ্গে গভীর সংঘাতে না জড়িয়ে উপায় নেই।
এ ঘটনার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। একদিকে যেমন ট্রাম্পের সমর্থকেরা এই পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন, তেমনি বিরোধী পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হচ্ছে।
অনেকের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এই সংঘাত বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করে এবং দেশের অভ্যন্তরে জনসমর্থন ধরে রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস