যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইয়েমেনে নিহত বহু, বাড়ছে যুদ্ধের শঙ্কা!

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় আবারও উত্তপ্ত ইয়েমেন। দেশটির হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন স্থানে ৪০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে মার্কিন বাহিনী। শুক্রবার ভোরে চালানো এই হামলায় দেশটির রাজধানী সানাসহ সাদাহ, মারিব, আল-জাওফ ও হুদাইদাহ প্রদেশের আবাসিক এলাকা এবং দোকানগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘আল-মাসিরাহ’ টেলিভিশন এই খবর জানিয়েছে। মার্কিন বিমান হামলায় সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সানার উত্তরে সামরিক ঘাঁটি ও অন্যান্য স্থাপনাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে সানাতেই একজন রয়েছে। হামলার পর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলেও জানা গেছে। তবে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (CENTCOM), যাদের হোয়াইট হাউজের অনুমোদনক্রমে ইয়েমেনে সরাসরি হামলার অধিকার রয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তাদের অভিযানের কথা স্বীকার করেনি।

এই নতুন বিমান হামলার ঘটনা শুরু হয়েছে, যখন হুতি বিদ্রোহীরা গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালানোর হুমকি দেয়। বিদ্রোহীদের দাবি, এই হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষ দূত হান্স গ্রান্ডবার্গ সম্প্রতি ব্রাসেলসে এক বক্তব্যে যুদ্ধের দশ বছর পর শান্তি প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইয়েমেনে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ পরিস্থিতি কারো জন্যই কাম্য নয় এবং তা অবশ্যই এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

গ্রান্ডবার্গ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং সকল পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ইয়েমেনি জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে একতাবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা গত নভেম্বর মাস থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর একশ’র বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তারা এই হামলাগুলো চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে।

বিদ্রোহীদের হামলায় ইতোমধ্যে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে, একটি আটক করা হয়েছে এবং অন্তত চারজন নাবিকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের এই আক্রমণের কারণে বিশ্বজুড়ে নৌ-চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, ফলে অনেক কোম্পানি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পথে জাহাজ ঘোরাতে বাধ্য হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিকেও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত একজন নিহত হয়েছে এবং তেল আবিবের একটি স্কুলসহ বেশ কয়েকটি ভবনের ক্ষতি হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *