আতঙ্কের অবসান? ‘অদৃশ্য বন্দুক’ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বড় সিদ্ধান্ত!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ঘোস্ট গান’ বিষয়ক একটি নতুন ফেডারেল বিধি বহাল রেখেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বুধবারের এই রায়ে মূলত শনাক্ত করা কঠিন এমন আগ্নেয়াস্ত্রের বিস্তার রোধের লক্ষ্যে জো বাইডেন প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপকে সমর্থন জানানো হয়েছে।

সাধারণত অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হওয়া এইসব অস্ত্রের বিরুদ্ধে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আদালতের ৭-২ সংখ্যাগরিষ্ঠতার রায়ে নিম্ন আদালতের একটি সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। এর আগে, নিম্ন আদালত জানিয়েছিল, ফেডারেল ব্যুরো অফ অ্যালকোহল, টোব্যাকো, ফায়ার আর্মস অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস (এ টি এফ) ‘ঘোস্ট গান’ তৈরি ও বিক্রির ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে তাদের এখতিয়ারের বাইরে কাজ করেছে।

এই ‘ঘোস্ট গান’ তৈরি হয় এমন সব যন্ত্রাংশ এবং কিটের ওপর নজরদারি চালাতেই মূলত এই ফেডারেল বিধি তৈরি করা হয়েছে।

‘ঘোস্ট গান’ হলো এমন এক ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র যা সহজে সনাক্ত করা যায় না। কারণ প্রস্তুতকারকরা এর সিরিয়াল নম্বর দেয় না।

সাধারণত অনলাইনে এইসব অস্ত্রের যন্ত্রাংশ কিনে বাড়িতেই তা তৈরি করা সম্ভব। ফলে, যারা অস্ত্র কিনতে আইনত নিষিদ্ধ, যেমন – অপরাধী বা নাবালক, তাদের কাছেও এই অস্ত্র চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এই রায়ের ফলে, এখন থেকে ‘ঘোস্ট গান’-এর যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারকদের এইগুলোর ওপর সিরিয়াল নম্বর বসাতে হবে, লাইসেন্স নিতে হবে এবং ক্রেতাদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে হবে।

অন্যান্য বৈধ অস্ত্রের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কর্তৃপক্ষের ধারণা, এই নতুন বিধি কার্যকর হলে আগ্নেয়াস্ত্রের অপব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।

আদালতের শুনানিতে বিচারপতিরা মূলত এ টি এফ-এর এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানান। আদালত জানিয়েছে, ১৯৬৮ সালের গান কন্ট্রোল অ্যাক্টের আওতায় এই ধরনের কিট ও যন্ত্রাংশকেও ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এইসব কিট তৈরি করতে হলে প্রস্তুতকারকদের লাইসেন্স নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের অধিকার নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। কিছু রক্ষণশীল বিচারক অস্ত্র আইনের উদারীকরণের পক্ষে মত দেন।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট আগ্নেয়াস্ত্র বহনের অধিকারকে আরও বিস্তৃত করেছে। তবে, বাইডেন প্রশাসন ‘ঘোস্ট গান’ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ায় সহিংসতার মাত্রা হয়তো কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের ব্যাপক ব্যবহার এবং এর সাথে জড়িত সহিংসতা একটি উদ্বেগের বিষয়। বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে বন্দুকের মালিকানার হার সবচেয়ে বেশি।

এই পরিস্থিতিতে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় বন্দুক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: রয়টার্স এবং এপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *