মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যের গতিপথে বড় ধরনের পরিবর্তনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব ‘নতুন রূপে’ প্রবেশ করছে, যেখানে নিয়ম-নীতির বদলে ‘চুক্তি ও জোট’-এর উপর গুরুত্ব বাড়বে।
এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে।
শনিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। যদিও যুক্তরাজ্যকে তুলনামূলকভাবে কম শুল্কের সম্মুখীন হতে হচ্ছে, অনেক দেশেই এই শুল্কের হার আরও বেশি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে একে ‘অর্থনৈতিক বিপ্লব’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে স্টারমার এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধের ফলস্বরূপ কেউই লাভবান হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির কারণে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের মতো দেশগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চীন সরকারও মার্কিন পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে।
এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশই প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। জিম্বাবুয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক স্থগিত করেছে। ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে না, বরং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক এবং বিনিয়োগের পরিবেশ বজায় রাখতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৩০ সালের ‘স্মুট-হলি শুল্ক আইন’-এর পর এটিই সবচেয়ে বড় শুল্ক বৃদ্ধি। সেই সময়ে এই আইনের কারণে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছিল এবং এর ফলস্বরূপ দেখা দিয়েছিল মহামন্দা।
বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এই পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্ব বাণিজ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
তৈরি পোশাক শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত, যা আমদানি ও রপ্তানির উপর নির্ভরশীল, তাদের উপর এই শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে। তাই, পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশকে একটি উপযুক্ত বাণিজ্য কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যাতে বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা থেকে দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করা যায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা