যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিখ্যাত হাইকিং ট্রেইলের সংস্কারে বাধা, অর্থ সংকটে বিপাকে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল সরকারের অর্থায়নে দেশটির দুটি জনপ্রিয় হাইকিং ট্রেইলের সংস্কার কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর কারণ হলো বাজেট কাটছাঁট এবং কর্মী ছাঁটাই। এই পরিস্থিতিতে হাইকিংয়ের জন্য আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃত প্যাসিফিক ক্রেস্ট ট্রেইল (Pacific Crest Trail) এবং জর্জিয়া থেকে মেইন পর্যন্ত বিস্তৃত অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইলে (Appalachian Trail) সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই পথগুলোতে গাছ উপড়ে পড়া, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজগুলো সময়মতো করা সম্ভব হচ্ছে না।
ট্রেইলগুলোর দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, বন ও জাতীয় উদ্যান বিভাগের কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এছাড়া, বাজেট কমানোর ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজও বাতিল করতে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রায়ই এখানে তীব্র ঝড় ও দাবানলের মতো ঘটনা ঘটছে, যা ট্রেইলগুলোর ক্ষতি আরও বাড়িয়ে তুলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা গেলে ভবিষ্যতে এই পথগুলো ব্যবহার করা কঠিন হয়ে পড়বে।
প্যাসিফিক ক্রেস্ট ট্রেইলের পরিচালক জাস্টিন কয়েম্যান জানান, বন বিভাগের কর্মীরা ছাঁটাই হওয়ায় হাইকারদের জন্য রাস্তা তৈরি ও গাছ কাটার মতো কাজগুলো করা যাচ্ছে না। ফলে হাইকারদের দুর্ভোগ বাড়বে।
অন্যদিকে, অ্যাপালাচিয়ান ট্রেইল সম্প্রতি ১০০ বছর পূর্ণ করেছে। এই ট্রেইলের রক্ষণাবেক্ষণে ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ১.৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা প্রয়োজন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে অনেক কিছুই করা যাচ্ছে না।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত অর্থ ও জনবল না থাকায় তাদের পক্ষে সব কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা না গেলে পর্যটকদের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
পর্যটকদের অনেকেই এই পরিস্থিতিতে হতাশ। হাইকিং করতে আসা একজন পর্যটক মারিয়াস মিশেল জানান, তিনি সরকারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন। তিনি বলেন, প্রকৃতির কাছাকাছি আসাটা তার জন্য মানসিক শান্তির বিষয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক স্থানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। নতুবা পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন