যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা উভয় দেশের অর্থনীতিকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও এই চুক্তির বিস্তারিত এখনো সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করা হয়নি, তবে এটিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই চুক্তির ফলে ব্রিটিশ বাজার মার্কিন গরুর মাংস, ইথানল এবং অন্যান্য কৃষি পণ্যের জন্য উন্মুক্ত হবে। একইসঙ্গে, ব্রিটিশ গাড়ি এবং ইস্পাত শিল্পের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ সহজ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার উভয়েই এই চুক্তির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চুক্তির আরও বিস্তারিত বিষয় প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে, স্টারমার এই চুক্তির মাধ্যমে হাজার হাজার অটোমোবাইল কর্মীর চাকরি রক্ষার উপর জোর দেন এবং দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেন।
এই চুক্তির কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো:
- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত প্রায় সকল পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখবে।
- যুক্তরাজ্য প্রতি বছর ১ লক্ষ গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে পারবে, যা বর্তমানে ২৭.৫ শতাংশ শুল্কের পরিবর্তে ১০ শতাংশ শুল্কের আওতায় আসবে।
- যুক্তরাজ্যের ইস্পাত এখন শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে, যেখানে আগে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো।
- উভয় দেশ গরুর মাংসের বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়াতে সম্মত হয়েছে, যার ফলে যুক্তরাজ্য ১৩ হাজার মেট্রিক টন গরুর মাংস শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে পারবে।
- যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইথানলের উপর শুল্ক বাতিল করবে।
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য শুল্ক-বহির্ভূত বাধাগুলো “হ্রাস বা নির্মূল” করবে।
হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মার্কিন কৃষি ও অন্যান্য পণ্যের রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।
এই বাণিজ্য চুক্তি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই ধরনের চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষ করে, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য চুক্তিগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দুটোই নিয়ে আসে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে, অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: Associated Press