যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই চুক্তির ব্যাপারে ওয়াশিংটনের আগ্রহের কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এবং বিশ্বজুড়ে মন্দা আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে ট্রাম্প অনেক শুল্ক কমিয়ে দেন।
চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্কের পরিবর্তে এখন তা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকার চাইছে, তারা যেন ট্রাম্পের এই শুল্কের আওতামুক্ত থাকতে পারে। ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স মনে করেন, উভয় পক্ষই একটি পারস্পরিক উপকারী চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে। তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই কিয়ার স্টারমারের সরকারের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কঠোরভাবে কাজ করছি।
প্রেসিডেন্ট যুক্তরাজ্যকে ভালোবাসেন, ভালোবাসেন রানীকে। এই সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং ব্রিটেনে তার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। আমার মনে হয়, এর গভীরতা আরও অনেক বেশি।”
ভ্যান্স আরও যোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র একটি অ্যাংলো কান্ট্রি। আমার মনে হয়, উভয় দেশের স্বার্থে একটি দারুণ চুক্তিতে আসা সম্ভব।
যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস চলতি মাসের শেষে ওয়াশিংটনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বৈঠকে যোগ দেবেন। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
ভ্যান্সের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক যুক্তরাজ্যের জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর চেয়ে বেশি সুবিধাজনক। জার্মানির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, জার্মানি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর রপ্তানির জন্য অনেক বেশি নির্ভরশীল, কিন্তু তারা আমেরিকায় ব্যবসা করতে আগ্রহী অনেক কোম্পানির প্রতি কঠোর।
ইউরোপীয় দেশগুলোর অভিবাসন ও প্রতিরক্ষা নীতি আরও জোরদার করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন ভ্যান্স। তিনি বলেন, শক্তিশালী একটি ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভালো, যা সুয়েজ সংকট বা ইরাক যুদ্ধের মতো ক্ষেত্রে তাদের ভুলগুলো শুধরাতে সহায়ক হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সম্ভাব্য এই বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্য কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ উভয়ই তৈরি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান