যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তির কাঠামো ঘোষণা করতে পারেন।
এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের মধ্যে শুল্ক হ্রাস করা এবং বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন রূপ দেওয়া। এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য নিয়ে যে উত্তেজনা চলছে, তার একটি চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে, ট্রাম্প বাণিজ্য শুল্ককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ফিরিয়ে আনা এবং কর হ্রাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত করতে চাইছেন। প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশই বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর পারস্পরিক শুল্ক কমানোর কথা বিবেচনা করছে।
তবে, এই চুক্তিটি কতটুকু ব্যাপক হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের চুক্তি হয়তো তাৎক্ষণিক কিছু সুবিধা দিতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে, বিশেষ করে পরিষেবা খাতে, যা এই চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
অন্যদিকে, এই চুক্তির আলোচনা চলতে থাকার সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো দেশগুলোও রয়েছে।
বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে এই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে নতুনভাবে সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি একটি উদ্বেগের বিষয়। গত বছর এই ঘাটতি ছিল প্রায় ২৯৫.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে বেশি। এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে।
একই সঙ্গে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চলছে, যেখানে শুল্ক কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়েও আলোচনা চলছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক সম্পূর্ণভাবে তুলে নিতে রাজি হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।
এই বাণিজ্য চুক্তিগুলো বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সহজ হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তবে, শুল্ক কমানো এবং বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুনভাবে সাজানো কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা