যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে। এই চুক্তির মূল বিষয় হলো, ইউক্রেনের বিরল খনিজ পদার্থগুলো ব্যবহারের সুযোগ পাবে যুক্তরাষ্ট্র, বিনিময়ে কিয়েভে একটি বিনিয়োগ তহবিল গঠন করা হবে।
এমনটাই জানা গেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা আলোচনা সফল হলো। রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে এই চুক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ, এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ পাবে। এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র একদিকে যেমন ইউক্রেনের পাশে থাকছে, তেমনি নিজেদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের সরবরাহও নিশ্চিত করতে পারবে।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। যদিও মাঝে কিছু বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়, যা আলোচনার গতি কিছুটা কমিয়ে দেয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেন তার খনিজ সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে। দেশটির খনিজ পদার্থগুলোর মালিকানা সম্পূর্ণরূপে ইউক্রেনের হাতেই থাকবে এবং দেশটিই সিদ্ধান্ত নেবে, কোথায়, কী পরিমাণ উত্তোলন করা হবে।
এই চুক্তির অন্যতম প্রধান কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো চীনের ওপর তাদের নির্ভরশীলতা কমাতে চাইছে। বর্তমানে বিরল খনিজ পদার্থের উৎপাদনে চীনের একচেটিয়া আধিপত্য রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া গেলে, যুক্তরাষ্ট্র বিকল্প উৎস খুঁজে পাবে। এই খনিজ পদার্থগুলো আধুনিক ইলেকট্রনিকস, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তি এবং সামরিক সরঞ্জামের জন্য অপরিহার্য।
চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন একটি যৌথ বিনিয়োগ তহবিল তৈরি করবে। উভয় দেশই এই তহবিলে সমানভাবে অর্থ দেবে এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও তাদের সমান অধিকার থাকবে।
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে এই তহবিলকে কাজে লাগাতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও তাদের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারবে।
এছাড়াও, এর মাধ্যমে রাশিয়াকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন