যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পাশে যুক্তরাষ্ট্র: খনিজ চুক্তিতে কি শান্তি আসবে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে উপনীত হয়েছে, যা ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ বিষয়ক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে আরও সুসংহত করবে। এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা এবং দেশটির পুনর্গঠনে মার্কিন বিনিয়োগের পথ সুগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই চুক্তিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ইউক্রেন তাদের মূল্যবান খনিজ এবং বিরল মৃত্তিকা (rare earths) সম্পদ বিক্রি করে যে অর্থ উপার্জন করবে, তার লাভ ও রয়্যালটি (স্বত্ব) ভাগাভাগি করবে যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো, একটি যৌথ ‘ইউএস-ইউক্রেন পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল’ গঠন করা।

এই তহবিল ইউক্রেনকে যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে দেশটির অর্থনীতিকে পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়াকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া হলো যে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘমেয়াদে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও সমৃদ্ধ ইউক্রেন দেখতে চায়। এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হবে।

এছাড়া, ইউক্রেনের পুনর্গঠনে রাশিয়ার সহযোগী কোনো ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের সুযোগ থাকবে না।

চুক্তি অনুযায়ী, লাভ ও ভোটাধিকারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন উভয়েই সমান সুবিধা ভোগ করবে। ইউক্রেন তার প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।

এই চুক্তির মাধ্যমে কেবল নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা ইউক্রেনের জন্য কোনো প্রকার ঋণের বোঝা তৈরি করবে না।

চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে ইউক্রেন তাদের খনিজ সম্পদের উন্নয়নের জন্য যৌথ বিনিয়োগের একটি ভালো সুযোগ পাবে। এছাড়াও, এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের স্বাধীনতাও অক্ষুণ্ণ থাকবে, যা দেশটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তবে, এই চুক্তির কিছু সমালোচকও রয়েছেন। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সম্পদ থেকে লাভবান হতে চাইছে এবং দেশটির ভবিষ্যতের সাহায্যকে খনিজ সম্পদের রাজস্বের সঙ্গে যুক্ত করছে।

যদিও, চুক্তির শর্তগুলো ইউক্রেনের জন্য আগের প্রস্তাবের চেয়ে অনেক বেশি সুবিধাজনক।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি দেশটির জন্য উপকারী হবে। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তির ফলে রাশিয়াকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন।

এই চুক্তির ফলে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ বিষয়ক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আরও স্পষ্ট হবে এবং দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *