মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলিনাতে ভয়াবহ দাবানল দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক হাজার একর বনভূমি পুড়ে গেছে এবং সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তাদের মতে, হ্যারিকেন হেলেনের কারণে এই অঞ্চলের গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
উত্তর ক্যারোলিনার পল্ক কাউন্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার ব্ল্যাক কোভ নামের দাবানলে প্রায় ২ হাজার ৭৬ একর এবং ডিপ উডস নামের আগুনে ১ হাজার ৭০০ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
ফিশ হুক নামের আরেকটি আগুনে ১ হাজার ৭১৩ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তবে এর মধ্যে ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এই তিনটি দাবানলই অ্যাশভিল শহর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরে অবস্থিত।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বিশেষ করে, শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিট থেকে পল্ক কাউন্টির কিছু অংশে বাধ্যতামূলকভাবে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানকার কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় এবং রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষ আটকা পড়তে পারে।
এছাড়া, জরুরি অবস্থার কারণে দক্ষিণ ক্যারোলিনার পিকেন্স কাউন্টিতেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সেখানে টেবিল রক নামক স্থানে শুক্রবার রাতে আগুন লাগে এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পরে প্রায় ৩০০ একর জায়গা জুড়ে।
দাবানলের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ার কারণে পল্ক কাউন্টিতে বায়ুর গুণগত মান মারাত্মকভাবে কমে গেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বেশি সময় থাকতে এবং ভারী কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
উত্তর ক্যারোলিনায় বর্তমানে বনভূমি পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। একইসঙ্গে, প্রতিবেশী রাজ্য সাউথ ক্যারোলাইনাতেও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, নিউ জার্সির হোয়ার্টন স্টেট ফরেস্টে শনিবার একটি দাবানল শুরু হয়, যা এরই মধ্যে প্রায় ৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানকার দুটি ক্যাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আগুনের কাছাকাছি থাকা ১৮টি ভবনের বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
বর্তমানে, দাবানলের কারণ অনুসন্ধানে কাজ চলছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান