মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ওই অঞ্চলের কিছু কূটনীতিক এবং সামরিক পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিচ্ছে। বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও প্রতিরক্ষা দপ্তর এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, ইরাক, বাহরাইন ও কুয়েতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসগুলো থেকে জরুরি নয় এমন কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। একইসঙ্গে, ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের এরবিলে অবস্থিত কনস্যুলেট থেকেও কর্মীদের সরানো হবে।
বর্তমানে এই পদক্ষেপের কারণ স্পষ্ট নয়। তবে, প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (CENTCOM) মধ্যপ্রাচ্যে “ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা” পর্যবেক্ষণ করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ পরিস্থিতি “বিপজ্জনক” হতে পারে। ইসরায়েলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বৃহস্পতিবার তাদের কর্মীদের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য তেল আবিব, জেরুজালেম ও বেরশেভা’র বাইরে ভ্রমণ সীমিত করেছে এবং সেখানে বসবাসকারী সকল মার্কিন নাগরিককে “সতর্কতা অবলম্বন” করতে বলেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের কারণ এখনো অজানা। তবে, এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হচ্ছে, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পারমাণবিক চুক্তি করার চেষ্টা করছে। প্রতিরক্ষা সচিব, পেটে হেগসেথ মধ্যপ্রাচ্য থেকে সামরিক পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।
“আমাদের সেনা সদস্য ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার,” জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিলা, সিনেট কমিটির সামনে তার নির্ধারিত সাক্ষ্য স্থগিত করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের কারণ হলো “অনিরাপদ পরিস্থিতি।” পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা আমাদের দূতাবাসগুলোতে কর্মীদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যালোচনা করি। সর্বশেষ পর্যালোচনার ভিত্তিতে, আমরা ইরাকে আমাদের মিশন হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
অন্যদিকে, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের আস্থা কমেছে। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, তেহরান সম্ভবত চুক্তি বিলম্বিত করছে।
গত মাসে, সিএনএন জানিয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে, যেখানে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয় এবং কোনো সংঘাতের সৃষ্টি হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে এই অঞ্চল ছাড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো ইরানের সামরিক বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন