উভালদে’র ভয়াবহতা: বন্দুক হামলার নতুন ভিডিও প্রকাশ, ফাঁস আসল ঘটনা!

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের উভালদে শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ সালের মে মাসে সংঘটিত ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনার নতুন কিছু তথ্য-প্রমাণ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এই ঘটনায় ১৯ জন শিশু ও ২ জন শিক্ষক নিহত হয়।

প্রকাশিত হওয়া ভিডিও এবং নথিপত্রগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, ঘটনার সময় পুলিশের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত ধীরগতির এবং এতে চরম শোক প্রকাশ করেছেন নিহতদের পরিবার।

প্রকাশিত নথিপত্রগুলোতে ঘটনার ভয়াবহতা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। গুলির শব্দে আতঙ্কিত শিক্ষক ও শিশুদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল।

ঘটনার সময় কিছু অভিভাবক বিদ্যালয়ের বাইরে এসে তাদের সন্তানদের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছিলেন, কিন্তু পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেনি। তারা কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের জীবন বাঁচানোর জন্য নিজেরাই বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় পুলিশের মধ্যে দ্বিধা ছিল। তারা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না, হামলাকারী কোথায় অবস্থান করছে। কিভাবে তার কাছে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়েও তারা নিশ্চিত ছিলেন না।

কিছু পুলিশ সদস্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও, অনেককে বেশ অসহায় অবস্থায় দেখা যায়। হামলাকারীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছিল, যা নিয়ে এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।

প্রকাশিত নথিপত্রে হামলাকারী ১৮ বছর বয়সী সালভাদর রামোসের বিষয়েও কিছু তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার কয়েক মাস আগে, রামোসের মা স্থানীয় পুলিশের কাছে ছেলের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছিলেন।

তিনি জানিয়েছিলেন, ছেলে তার কথা শোনে না এবং মাঝে মাঝে মারধরও করে। এমনকি তিনি ছেলেকে নিয়ে ভীত ছিলেন। বিদ্যালয়ের নথিপত্রেও রামোসের অস্থির আচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ছাত্রজীবনে তিনি পড়াশোনায় অমনোযোগী ছিলেন এবং বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ ছিল।

এই ঘটনার পর টেক্সাস রাজ্যের কর্মকর্তারা বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেন। তদন্তে পুলিশের ভূমিকা এবং হামলার কারণ অনুসন্ধানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে।

বর্তমানে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রাক্তন স্কুল পুলিশ প্রধান পিট অ্যারেনডো এবং প্রাক্তন স্কুল ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ অফিসার অ্যাড্রিয়ান গঞ্জালেজ-এর বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে শিশুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আদালতে অভিযুক্তরা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া এখনো চলছে। এই ঘটনার শিকার পরিবারগুলো তাদের স্বজন হারানোর শোক আজও বহন করছেন।

এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কিভাবে স্কুলের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা যায়, সে বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *