টেক্সাসের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালে সংঘটিত বন্দুক হামলার ঘটনার পর, শিক্ষক অ্যামি মারিন-ফ্রাঙ্কোকে নিয়ে ওঠা অভিযোগ আজও যেন কাটেনি। ঘটনার দিন তিনি যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, তার স্বীকৃতি আজও অধরাই রয়ে গেছে।
বরং, তাকেই ভিলেন হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, এমনটাই অভিযোগ করেছেন তিনি। ২০২২ সালের ২৪শে মে, টেক্সাসের উভালদের রব এলিমেন্টারি স্কুলে ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক ঘটনার দিনটি ছিল গ্রীষ্মের ছুটির আগের শেষ কর্মদিবস।
মারিন-ফ্রাঙ্কো স্কুলের বাইরে একটি গাড়ির দুর্ঘটনার শব্দ শুনে ছুটে গিয়েছিলেন। যখন তিনি দেখেন, এক যুবক বন্দুক হাতে গাড়ি থেকে নামছে, তখন দ্রুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাচ্চাদের এবং স্কুলের কর্মীদের রক্ষার জন্য তৎপর হন।
মারিন-ফ্রাঙ্কো সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি কাপুরুষ ছিলাম না।” কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখে, তিনি ছিলেন একজন, যিনি নিয়ম ভেঙেছিলেন এবং অজান্তে একজন হত্যাকারীকে স্কুলে প্রবেশ করতে সাহায্য করেছিলেন।
বন্দুকধারীর হামলায় ১৯ জন শিশু এবং ২ জন শিক্ষক নিহত হয়েছিল, যা ছিল এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ স্কুল শুটিং। তবে ঘটনার কয়েকদিন পরেই কর্মকর্তারা তাদের আগের অভিযোগ থেকে সরে আসেন।
কিন্তু মারিন-ফ্রাঙ্কো বলছেন, সেই সন্দেহ এখনো তার মনে গেঁথে আছে। প্রতিবেশীরা তো বটেই, এমনকি অপরিচিতরাও তাকে সে চোখে দেখে। ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি ঘর থেকে বের হননি।
স্কুলের বোর্ড মিটিংয়েও তিনি পিছনের সারিতে বসেছিলেন, কারণ নিহত শিশুদের পরিবারের সদস্যরা তাকে আক্রমণ করতে পারে, এমন একটা ভয় ছিল তার মনে। আজও অনেকে সেই মিথ্যাটাকেই সত্যি মনে করে।
মারিন-ফ্রাঙ্কো বলেন, “আমি প্রতিদিন এটা দেখি। বিভেদটা অনুভব করতে পারি। অনেকেই হয়তো এখনো মনে করে, ‘হুঁ, সে তো দরজাই খোলা রেখেছিল।’” যদিও ঘটনার প্রমাণ হিসেবে সেখানকার একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
মারিন-ফ্রাঙ্কো বিশ্বাস করেন, এই ভিডিও তার সম্মান পুনরুদ্ধার করতে পারবে। কিন্তু স্থানীয় এবং টেক্সাস রাজ্যের কর্মকর্তাদের গোপনীয়তা রক্ষার দীর্ঘ প্রচেষ্টার কারণে, সেই ফুটেজ এখনো সকলের সামনে আসেনি।
তিনি বলেন, “আমি সেই ভিডিওটি দেখতে চাই, কারণ আমি প্রমাণ করতে চাই যে আমি লুকানোর জন্য দৌড়ে আমার ক্লাসে যাইনি। আমি নিজের কথা ভাবিনি, আমি জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছিলাম।” ঘটনার দিন, মারিন-ফ্রাঙ্কো তার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এরপর তিনি তার শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নাচের অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরিকল্পনা করছিলেন। তিনি একটি কার্ট হাতে করিডোর দিয়ে যাচ্ছিলেন, যেখানে একটি বিশাল পোস্টারে লেখা ছিল, ‘২০২২ সালের ক্লাসের অভিনন্দন’।
যখন তিনি বাইরে থেকে কিছু জিনিস আনতে যান, তখন দরজার যাতে পুরোটা বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য একটি পাথর দিয়ে আটকে দেন। যদিও এটি স্কুলের নিয়ম বিরুদ্ধ ছিল, তবে শিক্ষকরা প্রায়ই তাদের ব্যক্তিগত জিনিস আনতে গেলে বা অল্প সময়ের জন্য বাইরে গেলে এমনটা করতেন।
কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই ঘটে সেই ভয়ংকর ঘটনা। একটি গাড়ির দুর্ঘটনার শব্দ শুনে তিনি দ্রুত ৯১১ নম্বরে ফোন করেন। তিনি যখন বিস্তারিত জানানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন, তখনই তার কণ্ঠ বদলে যায়।
তিনি দেখেন, দুটি লোক গাড়ির কাছে ছুটে যাচ্ছে। তাদের দেখে তিনি প্রথমে কিছুটা বিভ্রান্ত হন। এরপর তিনি যখন দেখেন, এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে তাদের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করে, তখন তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
“ওহ মাই গড, তার কাছে বন্দুক!” তিনি চিৎকার করে ওঠেন। মারিন-ফ্রাঙ্কো দ্রুত স্কুলের ভেতরে ফিরে যান এবং দরজা বন্ধ করে দেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিনি তার ডান পা দিয়ে পাথরটি সরিয়ে দরজার ছিটকিনি লাগান।
তিনি সিএনএনকে বলেন, “ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আমি দৌড়ে বিল্ডিংয়ের ভেতরে যাই এবং দরজা বন্ধ করি। আমি পাথরটি সরিয়ে দিই এবং দরজা বন্ধ করি।” যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগীয় তদন্তে জানা গেছে, তার এই কাজটি করার মাধ্যমে দরজাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ভেতরের দিক থেকে তা পরীক্ষা করার কোনো উপায় ছিল না। সিএনএন সম্প্রতি প্রকাশিত নথিতে দেখিয়েছে, হামলার আগে এই দরজায় এবং স্কুলের অন্যান্য দরজাতেও মেরামতের সমস্যা ছিল। করিডোরের ভিডিওতে দেখা যায়, মারিন-ফ্রাঙ্কো তার এক সহকর্মীর দরজায় ধাক্কা দিয়ে লকডাউন শুরু করতে বলেন এবং পুলিশের সাথে ফোনে কথা বলতে থাকেন।
তিনি হামলাকারীর গতিবিধি জানার জন্য দরজার কাছে ফিরে যান। মারিন-ফ্রাঙ্কো বলেন, “আমি দরজা ধরে রেখেছিলাম। আমার বাম হাতে ফোন ছিল এবং আমি তাকে বলছিলাম, ‘কালো হুডি, কালো চুল। সে একটি বন্দুক ছুঁড়ে ফেলেছে। একটি ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলেছে। আরেকটি বন্দুক ছুঁড়ে ফেলেছে। সে দেয়াল টপকেছে।’”
বন্দুকধারী তার ক্লাসে প্রবেশের প্রায় ৩০ সেকেন্ড আগে, মারিন-ফ্রাঙ্কো তার খালি ক্লাসরুমে যান এবং দরজা বন্ধ করেন। তার কাছে সেটি লক করার মতো কোনো চাবি ছিল না। তিনি বলেন, “আমি দরজার দিকে তাকিয়ে ছিলাম, এই ভেবে যে হামলাকারী বুঝি আমার ঘরে ঢুকছে।”
এরপর তিনি হয়তো করিডোরে যাবেন, না হয় কোথাও লুকাবেন—এমন চিন্তা করতে করতে অবশেষে তিনি তার ঘরের একটি কাউন্টারের নিচে আশ্রয় নেন। ফোন লাইনে থাকাকালীন, মারিন-ফ্রাঙ্কো অপারেটরকে ফিসফিস করে বলেন, হামলাকারী স্কুলের ভেতরে আছে।
এর কিছুক্ষণ পরেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি বলেন, “গুলি তখনও চলতেই ছিল, কিন্তু প্রতিটি গুলির পর সেখানে নীরবতা নেমে আসে।” তিনি তখন নিজের জীবনের কথা ভাবছিলেন।
হামলাকারীকে প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন কৌশলও তার মাথায় আসছিল। তিনি বলেন, “তারপর আমি কিছু কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম। আমি ভাবলাম, ওটা কিসের শব্দ? ওগুলো তো পুলিশের শব্দ।” পুলিশ অফিসাররা বন্দুকধারীর প্রবেশের প্রায় তিন মিনিটের মধ্যে একই দরজা দিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে।
কিন্তু তারা প্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং এরপর তারা অস্ত্র বা সরঞ্জাম আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। মারিন-ফ্রাঙ্কোর ক্লাসরুমের বাইরেই তাদের অধিকাংশই অবস্থান করছিল। অবশেষে, অপ্রত্যাশিতভাবে একজন অফিসার পাশের একটি ক্লাসরুমের দরজা খুলে তাকে বের করে আনেন।
মারিন-ফ্রাঙ্কো বলেন, “আমি ততক্ষণ পর্যন্ত নড়িনি, যতক্ষণ না কেউ এসে আমাকে বের করে নিয়ে যায়।” পুলিশ কর্মকর্তাদের স্কুলে প্রবেশ করতে প্রায় ২০ মিনিটের বেশি সময় লেগেছিল। বন্দুকধারীর সাথে তাদের মুখোমুখি হতে আরও ৫২ মিনিট লেগেছিল।
বন্দুকধারী তার দাদার ট্রাকটি স্কুলের কাছে ফেলে গেলেও, তার স্কুলে প্রবেশ করতে কোনো সমস্যা হয়নি। সে জানালা লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং মারিন-ফ্রাঙ্কো যে দরজাটি বন্ধ করেছিলেন, সেটিও সে খুলে ফেলে। এই ঘটনাগুলো কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্তে বড় ধরনের ভুল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল।
ঘটনার তিন দিন পর, টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক সেফটির (DPS) তৎকালীন পরিচালক কর্নেল স্টিভ ম্যাকগ্রো ঘটনার কিছু তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ, ৯১১-এর ফোন কল এবং অন্যান্য প্রমাণ থেকে জানা গেছে, মারিন-ফ্রাঙ্কো দরজা খুলে বাইরে গিয়েছিলেন এবং পরে ফোন আনতে ভেতরে ফিরে আসেন।
তবে তিনি দরজা বন্ধ করার বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেননি। পরে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পেছনের দরজা খোলা ছিল। সেটি খোলা থাকার কথা ছিল না। সেটি বন্ধ থাকার কথা ছিল। শিক্ষক, যিনি তার ফোন আনতে গিয়েছিলেন, তিনি আবার সেটি খুলেছিলেন। তাই এটিই ছিল হামলাকারীর প্রবেশের পথ।”
মারিন-ফ্রাঙ্কো তার মেয়ের সাথে বাড়িতে বসে টিভিতে ম্যাকগ্রোর কথা শুনছিলেন। তিনি বলেন, “আমি মেয়ের দিকে তাকালাম এবং বলতে লাগলাম, ‘আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম। আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম।” তিনি এতটাই অসুস্থ বোধ করছিলেন যে, মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
মারিন-ফ্রাঙ্কো স্মরণ করে বলেন, “নার্স আমার ভাইটাল চেক করছিলেন, আর আমি তার দিকে তাকিয়ে বলছিলাম, ‘আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম, আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম’। আমি মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাঁপছিলাম। তিনি বললেন, ‘আপনাকে শান্ত হতে হবে, আপনি কি অজ্ঞান হয়ে যাবেন?’ আর আমি তার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম, ‘আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম, আমি দরজা বন্ধ করেছিলাম।”
পরের দিন, তার সুপারভাইজার তাকে দেখতে আসেন। তিনি তাকে ঘটনাটি স্পষ্ট করতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেন। টেক্সাস রেঞ্জার এবং এফবিআই এজেন্ট এসে জানান, তারা ভিডিও পর্যালোচনা করেছেন এবং দেখেছেন যে তিনি দরজা বন্ধ করেছিলেন। ঘটনার এক সপ্তাহ পর, ডিপিএসের মুখপাত্র ট্রাভিস কনসাইডিন জানান, মারিন-ফ্রাঙ্কোর কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, “আমরা যাচাই করেছি যে তিনি দরজা বন্ধ করেছিলেন। তবে দরজাটি লক হয়নি। তদন্তকারীরা এখন দেখছেন, কেন এটি লক হয়নি।” কয়েক মাস পর, ম্যাকগ্রো স্বীকার করেন, এই ভুলটি সম্ভবত আরও আগেই সংশোধন করা যেত। তিনি বলেন, “আমি বলেছিলাম যে শিক্ষক দরজায় পাথর ঢুকিয়েছিলেন। আমি সেই শুক্রবার এটি বলেছিলাম এবং পরের সপ্তাহ পর্যন্ত তা সংশোধন করিনি।”
মারিন-ফ্রাঙ্কো বলেন, তার পরিবারের কাছে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি এটিকে যথেষ্ট মনে করেন না। “তারা আমাকে ফোন করেনি। আমার সন্তানদেরও না। তারা আমার কাছে ক্ষমাও চায়নি।” ছোট শহর উভালদের সবাই সবার পরিচিত।
নিহত শিশুদের অভিভাবকরা এখনো সেই অফিসারদের দেখেন, যারা ঘটনার সময় করিডোরে অপেক্ষা করছিলেন। মারিন-ফ্রাঙ্কোর নাতিও রব এলিমেন্টারিতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। হামলার শিকার এক শিক্ষকের সাথে স্কুলের এক পুলিশ অফিসারের বিয়ে হয়েছিল।
মারিন-ফ্রাঙ্কোকে নিয়ে যখন সমালোচনা চলছিল, তখন তিনি আরেকটি বিষয় নিয়েও উদ্বিগ্ন ছিলেন। তিনি বলেন, “যখন আমি ঘুমোতে যাই—যা খুবই কম হয়—আমি তার মুখ দেখি।” এই হামলার এক সপ্তাহ আগে, তিনি স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনেছিলেন।
সেই সময় যে যুবক তাকে খাবার পরিবেশন করেছিল, সেই-ই ছিল বন্দুকধারী। মারিন-ফ্রাঙ্কো বলেন, “সে আমাকে খাবার দিয়েছিল এবং তার মধ্যে খারাপ কিছু ছিল না। কোনো অশুভ কিছু ছিল না।” এখন তিনি তার মন থেকে সেই মুখটি মুছে ফেলতে চান।
মারিন-ফ্রাঙ্কো, যিনি বর্তমানে ৬০ বছর বয়সী, সেই ঘটনার পর থেকে আর কাজ করেননি। মানসিক এবং শারীরিক কষ্টের কারণে, তিনি এখনো কাঁপেন এবং খুঁড়িয়ে হাঁটেন। কোনো সাইরেন শুনলে বা হাত ধোয়ার সময় তার প্যানিক অ্যাটাক হয়। তিনি একা থাকেন এবং প্রার্থনা ও বই পড়ে সময় কাটান।
তিনি ছবিও আঁকেন, যা তার হাতে কাঁপুনি কমাতে সাহায্য করে। তিনি কিছু ছবি বিক্রি করে তার বিল পরিশোধ করেন। তার লিভিং রুমে সূর্যমুখীর ছবি টাঙানো আছে। তবে তিনি যদি পারতেন, তাহলে উভালদ থেকে চলে যেতেন।
তিনি বলেন, “যদি আমি সুস্থ হতে চাই, তাহলে আমাকে এখান থেকে যেতে হবে। আমি অন্য মানুষ ছিলাম। তবে সেই দিনটি (ঘটনার দিন) আমি মরে গেছি। আমি আগের ছবিগুলো দেখি, কিন্তু এখন আর আমি সেই মানুষটা নেই।” এখনও তিনি চান সবাই দেখুক, তিনি কী করেছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি চাই সারা বিশ্ব দেখুক যে, আমি লুকানোর জন্য দৌড়ে আমার ঘরে যাইনি। আমি সবাইকে সতর্ক করছিলাম যে, স্কুলে একজন বন্দুকধারী আছে। আমি সেই ৩৭৬ জন অফিসারের মতো বসে ছিলাম না। আমি সবাইকে তাদের ঘরে যেতে বলছিলাম।” যদিও সিএনএন এবং অন্যান্য গণমাধ্যম তিন বছর আগে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে, তবে সেটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
উভালদে শহর, কাউন্টি এবং স্কুল ডিস্ট্রিক্ট তাদের পাবলিক রেকর্ড প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে টেক্সাস ডিপিএস এখনো সেই ফুটেজ গোপন রাখতে চাইছে। ডিপিএস সিএনএনকে জানিয়েছে, তাদের ভিডিওটি প্রকাশের কোনো পরিকল্পনা নেই।
তারা বলেছে, “আপনারা যে ভিডিওটির কথা বলছেন, সেটি একটি ফৌজদারি তদন্তের প্রমাণ হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বর্তমানে একটি বিচারাধীন মামলার প্রমাণ হিসেবে রাখা হয়েছে।” তিন বছরের বেশি সময় পরে, মারিন-ফ্রাঙ্কো অবশেষে তার প্রাক্তন নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে একটি ক্ষমা চেয়েছেন।
তিনি বলেন, স্কুলের কোনো কর্তৃপক্ষ তার সাথে যোগাযোগ করেনি। স্কুলের বোর্ড মিটিংয়ে তিনি সদস্যদের কাছে তাদের প্রতিশ্রুত পাবলিক রেকর্ড প্রকাশ না করার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেছিলেন, “আপনারা আমাদের বিশ্বাস করতে বলেছিলেন, কিন্তু আমরা কীভাবে করব? আপনারা বলছেন, আপনারা স্বচ্ছতার পক্ষে, কিন্তু আপনারা সেই ফুটেজ গোপন করেছেন, যা আমার নাম পরিষ্কার করবে এবং সেদিন আমার সাহসিকতা ও সত্যতা প্রকাশ করবে।”
ডিসট্রিক্টের আইনজীবীরা ভুল স্বীকার করার পরে, বোর্ড সদস্য জেজে সুয়ারেজ জানান, তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে ফুটেজ দেখেছেন। তিনি বলেন, “আমি আনন্দিত যে সেই ভিডিওটি ছিল, কারণ আপনি অনেক কিছু সহ্য করেছেন এবং সেই ভিডিওটি কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা আমি জানি না।
তবে এটি আপনাকে মুক্তি দিয়েছে, অ্যামি, এটি আপনাকে কোনো ভুল বা আপনার বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।” পরবর্তী বৈঠকে স্কুল বোর্ড, ডিপিএসের কাছে থাকা তাদের ফাইলগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানায়। তাদের আইনজীবী ফিলিপ ফ্রাইসিনেট ব্যাখ্যা করেন, “ডিস্ট্রিক্ট সেই রেকর্ডগুলোর জন্য অনুরোধ করেছে, কিন্তু সেগুলো এখনো পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “বোর্ড আদালতের কাছে আবেদন করতে চায়, যাতে ডিস্ট্রিক্টের কাছ থেকে নেওয়া এবং ডিপিএসের কাছে থাকা সমস্ত রেকর্ড ও রেকর্ডিং প্রকাশ করা হয়।” তখন প্রায় মধ্যরাত হতে চলল, কিন্তু মারিন-ফ্রাঙ্কো তখনও সেখানে ছিলেন। তিনি সত্যের পথে তার যাত্রায় আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন