এক বছর পর: অস্ট্রেলিয়ার দ্বীপে হারিয়ে যাওয়া কুকুর ভ্যালেরির বেঁচে থাকার চমক!

ক্যাঙ্গারু দ্বীপে হারিয়ে যাওয়া একটি ছোট আকারের ড্যাক্সহাউন্ড, ভ্যালেরি, ১৬ মাস পর অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই ঘটনাটি পশুপ্রেমী এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিপুল চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার এই দ্বীপে ২০২১ সালের নভেম্বরে ভ্যালেরিকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, এরপর থেকে সেটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা এই কুকুরটিকে এখনো পর্যন্ত ধরা সম্ভব হয়নি।

ভ্যালেরির মালিক, জর্জিয়া গার্ডনার এবং জশ ফিশলক জানিয়েছেন, তাঁদের আদরের এই পোষ্যটি সাধারণত তাঁদের সঙ্গেই থাকত এবং খুবই শান্ত স্বভাবের ছিল। তারা জানান, ২০২১ সালে অবকাশ যাপনের সময় ক্যাম্পিং সাইট থেকে ভ্যালেরি পালিয়ে যায়।

এর আগে তারা কখনোই ভ্যালেরিকে একা ছাড়েননি। হারিয়ে যাওয়ার সময় ভ্যালেরির ওজন ছিল মাত্র ৪ কিলোগ্রাম এবং তার গলায় গোলাপি রঙের একটি কলার ছিল।

কুকুরটিকে খুঁজে বের করার জন্য স্থানীয়দের সাহায্য নেওয়া হয়। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও ভ্যালেরিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে।

সম্প্রতি জানা গেছে, ভ্যালেরিকে শেষবার তার হারিয়ে যাওয়ার স্থান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে দেখা গেছে। কানগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ নামের একটি সংস্থা ভ্যালেরিকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে।

তারা জানিয়েছে, কুকুরটিকে ধরার জন্য ক্যামেরা ও ফাঁদ পাতা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্য পরিবেশে এত দিন টিকে থাকাটা ভ্যালেরির জন্য সত্যিই আশ্চর্যের। তারা মনে করছেন, হয়তো রাস্তাঘাটে মৃত প্রাণী খেয়ে অথবা জলাশয়ের জল পান করে সে বেঁচে আছে।

সিডনির একটি পশুচিকিৎসা বিদ্যালয়ের অধ্যাপক, পল ম্যাকগ্রিভি জানিয়েছেন, কুকুরেরা পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। খাবারের সন্ধানে তারা খুবই পারদর্শী।

তবে কিছু বিশেষজ্ঞের ধারণা, হয়তো কোনো মানুষ ভ্যালেরিকে সাহায্য করেছে। যদিও অধ্যাপক ম্যাকগ্রিভি এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন।

তাঁর মতে, যদি কোনো মানুষ ভ্যালেরিকে খাবার দিত, তাহলে তার গলার গোলাপি কলারটি দেখে তারা মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করত।

অস্ট্রেলিয়ায় বন্য কুকুরের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৩০২ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। এটি একটি বিশাল অংক।

ভ্যালেরির এই টিকে থাকার গল্পটি পশুপ্রেমীদের কাছে যেমন এক বিস্ময়, তেমনই বন্য পরিবেশে একটি পোষা কুকুরের জীবন ধারণের ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে ভাবাচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *