যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হয়ে কিউবার কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে-তে কয়েক দিন কাটানোর পর নিজের জন্মভূমিতে ফিরে আসা এক ভেনেজুয়েলার তরুণের জীবন সংগ্রামের গল্প। জোহান বাস্তিদাস নামের এই ২৫ বছর বয়সী যুবক কঠিন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে তিনি একসময় নিজের দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে বাস্তিদাস এবং তার পরিবার ভেনেজুয়েলার মারাকেইবো শহর ত্যাগ করেন।
তখন তাদের জীবন ছিল কঠিন। পরিবারের ভরণপোষণের জন্য তারা প্রথমে পেরু এবং পরে কলম্বিয়ায় আশ্রয় নেন। এরপর, উন্নত জীবনের আশায় তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় তিনি মার্কিন কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েন। এরপর, তাকে টেক্সাসের একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়। সেখান থেকে তাকে প্রথমে অজানা একটি বিমানে তুলে গুয়ানতানামো বে-তে নিয়ে যাওয়া হয়।
গুয়ানতানামো বে-তে তার বন্দী জীবন ছিল বিভীষিকাময়। ছোট্ট একটি কক্ষে দিনের পর দিন বন্দী থাকতে হয়েছে তাকে। বাইরের আলো-বাতাস থেকে ছিলেন বঞ্চিত। সামান্য একটি জানালা দিয়ে মাঝে মাঝে সূর্যের আলো দেখতেন।
সেখানে বন্দীদের প্রতি ছিল চরম অবমাননাকর আচরণ। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বাস্তিদাসকে মাদক চোরাচালান চক্রের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করে, যদিও এর স্বপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
এমনকি, তার শরীরে আঁকা ট্যাটুর কারণেও তাকে অপরাধী হিসেবে সন্দেহ করা হয়। অবশেষে, প্রায় ১৬ দিন বন্দী থাকার পর তাকে অন্য কয়েকজন ভেনেজুয়েলার নাগরিকের সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
দেশে ফিরে তিনি আবার নতুন করে জীবন শুরু করার চেষ্টা করছেন। সেখানকার অর্থনৈতিক সংকট এখনো কাটেনি। কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন। অনেক ভেনেজুয়েলার নাগরিকের মতো বাস্তিদাসও এখন কঠিন বাস্তবতার সঙ্গে লড়াই করছেন।
বাস্তিদাসের এই গল্প ভেনেজুয়েলার হাজারো মানুষের প্রতিচ্ছবি। যারা ভালো জীবনের আশায় দেশ ছেড়েছিলেন, কিন্তু সেখানেও তাদের কপালে জুটেছে অনিশ্চয়তা। এই ঘটনা উদ্বাস্তু সমস্যা এবং অভিবাসন সংকটকে নতুন করে সামনে নিয়ে আসে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস