‘নরকে’ অত্যাচারের বিভীষিকা! ফিরে আসা শরণার্থীদের কান্না, জানুন…

ভেনেজুয়েলার অভিবাসীরা, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হয়ে এল সালভাদরের কারাগারে বন্দী ছিলেন, তাদের দেশে ফিরে আসার পর সেখানকার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, কারাগারে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। মার্কিন সরকার তাদের বিরুদ্ধে একটি বিদেশি গ্যাংয়ের সদস্য হওয়ার অভিযোগ এনেছিল।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি কঠোর করে। এর অংশ হিসেবে, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা অনেক ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর এল সালভাদরের একটি কারাগারে তাদের বন্দী করে রাখা হয়।

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে এই অভিবাসীদের মুক্তি দেওয়া হয়।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ভেনেজুয়েলার অভিবাসীরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। তাদের চোখেমুখে ছিল স্বজন হারানোর বেদনা এবং মুক্তি পাওয়ার আনন্দ। অনেকে জানিয়েছেন, কারাগারে তাদের ওপর চালানো হয়েছে অকথ্য নির্যাতন। তাদের মারধর করা হয়েছে, এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

কার্লোস উজকাতেগি নামের একজন অভিবাসী জানান, কারাগারে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিদিন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতাম, যেন এখান থেকে মুক্তি পাই এবং পরিবারের কাছে ফিরতে পারি।”

আর্টুরো সুয়ারেজ নামের আরেকজন অভিবাসী বলেন, “ওই কারাগার ছিল নরকের মতো। আমরা অনেক নির্দোষ মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাদের জীবন নিয়ে দর কষাকষি করা হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জানিয়েছেন, কারাগারে আটক অভিবাসীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এরই মধ্যে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলির বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, এই অভিবাসীদের এল সালভাদরে রাখার জন্য মার্কিন সরকার দেশটির সরকারকে প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছিল।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাদের কান্নার মধ্যে মিশে ছিল মুক্তির আনন্দ। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে অভিবাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *