মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে হন্ডুরাসের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনা সম্প্রতি নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এই প্রক্রিয়াটি আবার শুরু হয়েছে, যেখানে হন্ডুরাসকে একটি মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রবিবার, ১৯ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে হন্ডুরাসে ফেরত পাঠানো হয়, যাদের পরে ভেনেজুয়েলায় পাঠানো হয়।
এই ঘটনা প্রবাহের সূত্রপাত হয় যখন ভেনেজুয়েলার সরকার ঘোষণা করে যে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়া লোকজনকে গ্রহণ করতে রাজি। এর কয়েকদিন পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ, আর এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া সেই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভেনেজুয়েলার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, অভিবাসন কোনো অপরাধ নয় এবং যারা ফিরতে চান, তাদের প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করতে তারা প্রস্তুত। একইসঙ্গে, এল সালভাদরে বন্দী হওয়া ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য তারা চেষ্টা চালাবেন।
অন্যদিকে, হন্ডুরাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, হন্ডুরাস ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে, এই ঘটনার সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের গোপন কোনো আলোচনা ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কারণ, হন্ডুরাসের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার সুসম্পর্ক রয়েছে।
এই বিতাড়ন প্রক্রিয়ার কারণ হিসেবে জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের সঙ্গে একটি গ্যাং, ‘ট्रेन দে আরাগয়া’-এর যোগসূত্র থাকার অভিযোগ এনেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে।
এমনকি, কয়েকজন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, যাদের সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। পরে জানা যায়, তাদের মধ্যে কয়েকজন গ্যাং সদস্য ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভেনেজুয়েলার তেল কেনা দেশগুলোর উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অভিযোগ করেছেন, ভেনেজুয়েলা ইচ্ছাকৃতভাবে ‘আন্ডারকভার’ গ্যাং সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া এবং ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে। একইসঙ্গে, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ক্ষেত্রেও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান