ভাইকে কিডনি দিতে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ব্যক্তির মানবিক আবেদন, অবশেষে মিলল মুক্তি!

শিরোনাম: ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ভেনেজুয়েলার নাগরিক, অবশেষে মিলল মানবিক প্যারোলের অনুমতি।

যুক্তরাষ্ট্রে ভাইয়ের কিডনি প্রতিস্থাপনে সাহায্য করতে আসা এক ভেনেজুয়েলার নাগরিককে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)। তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছে সংস্থাটি।

জানা যায়, হোসে গ্রেগোরিও গঞ্জালেজ নামের ৪৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি তাঁর ভাই হোসে আলফ্রেডো পাচেকোর জীবন বাঁচানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। পাচেকো দীর্ঘদিন ধরে কিডনি বিকল হয়ে ভুগছেন।

ভাইয়ের কিডনি পেলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠতেন।

হোসে আলফ্রেডো পাচেকো ২০২২ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এরপর তিনি শিকাগো অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করেন।

সেখানে আসার পর পেটে ব্যথা অনুভব করলে স্থানীয় একটি হাসপাতালে যান তিনি। পরীক্ষায় তাঁর কিডনি বিকল ধরা পড়ে।

এরপর ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য ২০২৩ সালের শেষে গঞ্জালেজ যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর সীমান্ত পার হওয়ার সময় অভিবাসন কর্মকর্তারা তাঁকে আটক করেন। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকেই বিতাড়নের নির্দেশ ছিল।

পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ভাইয়ের দেখাশোনা শুরু করেন এবং তাঁরা দুজনেই কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

কিন্তু মার্চ মাসের শুরুতে, আইস কর্মকর্তারা তাঁদের ইলিনয়ের সিসেরোতে অবস্থিত বাড়িতে হানা দেন এবং গঞ্জালেজকে আবার আটক করেন। এরপর তাঁর বিতাড়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

তবে, সম্প্রতি তাঁর আইনজীবী জানান, আইস মানবিক কারণে গঞ্জালেজকে প্যারোলে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে।

এর ফলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থেকে তাঁর ভাইয়ের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারবেন এবং সম্ভবত কিডনিও দিতে পারবেন।

গণমাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী শুক্রবার গঞ্জালেজের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আইস এখনো তাঁর মুক্তির শর্ত জানায়নি।

হোসে আলফ্রেডো পাচেকো বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন চার ঘণ্টা করে ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন। তিনি জানান, প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে চিকিৎসা না হলে তাঁর পক্ষে বেশি দিন বেঁচে থাকা কঠিন।

ভাই তাঁর জীবন বাঁচাতে এসেছেন জানিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজারের বেশি মানুষ কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করছেন। জীবিত দাতার কাছ থেকে পাওয়া কিডনি প্রতিস্থাপন এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

গঞ্জালেজের মুক্তি পাওয়ার পর, তাঁরা প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নেবেন।

যদি তাঁদের কিডনি ম্যাচ না করে, তবে তাঁরা ‘পেয়ার্ড কিডনি এক্সচেঞ্জ’ নামক একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে অন্য কোনো দাতার সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করবেন।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঞ্জালেজ কিডনি দান করে একইসঙ্গে দুজন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *