মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় দুইশো ভেনেজুয়েলীয় পুরুষকে তাদের শরীরে আঁকা ট্যাটুর কারণে একটি কুখ্যাত গ্যাং সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করে বিতাড়িত করা হয়েছে। আইনজীবীরা বলছেন, এই বিতাড়ন প্রক্রিয়াটি ছিল বেআইনি এবং এতে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে।
জানা গেছে, বিতাড়িত হওয়া পুরুষদের মধ্যে অনেকের ট্যাটু ছিল খুবই সাধারণ—যেমন, একটি ফুটবল এবং তার উপরে একটি মুকুট, অথবা চোখের একটি নকশা। মার্কিন কর্তৃপক্ষ এই ট্যাটুগুলোকে ত্রেন দে আরাগুয়া নামক একটি কুখ্যাত গ্যাংয়ের সদস্যতার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করেছে।
এই গ্যাংটি মূলত ভেনেজুয়েলায় সক্রিয়। আইনজীবীরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে একটি পুরনো যুদ্ধকালীন আইনের অধীনে এই বিতাড়নগুলো সম্পন্ন করা হয়েছে।
এই আইনের বলে, বিদেশি নাগরিকদের যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া ছাড়াই বিতাড়িত করা যায়। আইনজীবীরা আরও উল্লেখ করেছেন, গ্যাং সদস্যতার প্রমাণ হিসেবে যে সমস্ত ‘প্রমাণ’ পেশ করা হয়েছে, সেগুলি খুবই দুর্বল।
তাদের মতে, শুধুমাত্র ট্যাটুর ভিত্তিতে কাউকে গ্যাং সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা এবং বিতাড়িত করা ন্যায়বিচার-বহির্ভূত। উদাহরণস্বরূপ, একজন ভেনেজুয়েলীয় ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে যিনি জানিয়েছেন, তিনি ইন্টারনেটে একটি ডিজাইন দেখে চোখের এই ট্যাটুটি করিয়েছিলেন, কারণ এটি তার ভালো লেগেছিল।
একইভাবে, জেরসে রেয়েস বারিয়োস নামের ৩৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তির আইনজীবী জানিয়েছেন, ক্লাবের পছন্দের লোগোর অনুকরণে করা একটি ফুটবল এবং মুকুটের ট্যাটুকে গ্যাংয়ের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
বারিয়োস পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন এবং স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের লোগো থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এই ট্যাটুটি করিয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যাটিন আমেরিকার কিছু গ্যাং তাদের সদস্যদের চিহ্নিত করতে ট্যাটুর ব্যবহার করে থাকে, তবে ত্রেন দে আরাগুয়ার ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব তেমন নেই।
তাছাড়া, সারা বিশ্বে ট্যাটুর জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে এগুলো নিছক শরীরের সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ। নিউ ইয়র্ক সিটির একটি মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক কার্লা অস্টোলাজা বলেছেন, “এই ধরনের ট্যাটু অন্য কোনো দেশের মানুষের শরীরে থাকলে গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ হিসেবে দেখা হয়।
আইনজীবীরা জোর দিয়ে বলছেন, বিতাড়িত হওয়া পুরুষদের গ্যাং সদস্য প্রমাণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। তাদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং এর বিরুদ্ধে তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			