মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মধ্যে ‘অনিশ্চয়তার’ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হলো ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস’ বা টিপিএস। এই কর্মসূচির আওতায় যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা অন্য কোনো কারণে নিজ দেশে ফিরতে অনিচ্ছুক বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়।
বর্তমানে, ভেনেজুয়েলার বহু নাগরিক এই টিপিএস সুবিধার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎ এখন গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে প্রায় ৩ লক্ষ ভেনেজুয়েলার নাগরিকের টিপিএস বাতিল করার ঘোষণা দেন। যদিও পরে আদালতের হস্তক্ষেপে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়, তারপরও ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মধ্যে শঙ্কা কমেনি।
কারণ, টিপিএস-এর মেয়াদ সাধারণত ১৮ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে, যা তাদের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের জন্য যথেষ্ট নয়।
টেক্সাসের একটি অভিবাসী সহায়তা সংস্থার প্রধান আন্দ্রেস পাচেকো জানান, টিপিএস পাওয়া আগে তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল, তবে এখন অনেকের কাছেই এটি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, টিপিএস-এর মেয়াদ সীমিত হওয়ায় এই সুবিধাভোগীরা এক ধরনের উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটান।
ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের টিপিএস বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেন অনেকে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ অভিবাসীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করেছে।
কারণ, অনেক ভেনেজুয়েলার নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জীবন গড়ে তুলেছেন এবং এই টিপিএস তাদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিপিএস বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
কারণ, ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখনও স্থিতিশীল নয়।
তবে, এই পরিস্থিতিতেও অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, টিপিএস তাদের জীবনকে নতুন করে সাজাতে সাহায্য করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্থায়ী ঠিকানা তৈরি করতে সহায়তা করেছে।
তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, টিপিএস বিষয়ক সিদ্ধান্তগুলো প্রায়ই রাজনৈতিক স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাই, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা