ডেনমার্কের চলচ্চিত্র ‘দ্য ভেনাস ইফেক্ট’ – ভালোবাসার গল্প, যা প্রচলিত ধারণার বাইরে
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ডেনিশ চলচ্চিত্র ‘দ্য ভেনাস ইফেক্ট’ বর্তমান সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। সিনেমাটি ভালোবাসার গল্প বললেও, চিরাচরিত রোমান্টিক কমেডির ছক ভেঙেছে। এখানে লিভ নামের একজন তরুণীর গল্প বলা হয়েছে, যে অন্য একজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
এই আকর্ষণ থেকে নিজেকে আবিষ্কারের এক ভিন্ন পথে তার যাত্রা শুরু হয়।
চলচ্চিত্রটি মূলত লিভ এবং আন্দ্রেয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে আবর্তিত। তাদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে জোহানে মিলান্ড এবং জোসেফিন পার্ক। ছবিতে তাদের রসায়ন বেশ প্রাণবন্ত।
সিনেমাটিতে হাস্যরস এবং গভীর আবেগ দুটোই রয়েছে। সম্পর্কের টানাপোড়েন, আত্ম-অনুসন্ধান এবং পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক – এই বিষয়গুলো খুবই সংবেদনশীলভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
লিভ বুঝতে পারে, সে হয়তো মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট। কিন্তু এই সত্যকে সে কিভাবে গ্রহণ করবে? এই দ্বিধা, নিজের ভেতরের এই ভিন্নতাকে সমাজের চোখে কিভাবে দেখবে, এই বিষয়গুলো নিয়েই ছবির গল্প এগিয়ে যায়।
ছবিতে এমন একটি সংলাপ আছে, যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য – “আমার মনে হয়, আমি গে হওয়ার মতো যথেষ্ট গে নই”। এই একটি বাক্যের মধ্যে লিভের দ্বিধা এবং তার মানসিক অবস্থা ফুটে উঠেছে।
সে হয়তো কোনো মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট, কিন্তু সমাজের গে সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিজেকে সে কতটা মেলাতে পারবে, সেই বিষয়ে তার সন্দেহ রয়েছে।
ছবিটি আমাদের সমাজে প্রচলিত কিছু ধারণা ভেঙে দেয়। এখানে এমন একটি পরিবারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে লিভ-এর এই নতুন পরিচয়কে তারা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে না। বরং তারা হয়তো কিছু ক্ষেত্রে হতাশ হয়, কিন্তু লিভের প্রতি তাদের ভালোবাসা অটুট থাকে।
‘দ্য ভেনাস ইফেক্ট’ -এর গল্পে, সমকামিতা, ভালোবাসার মতো বিষয়গুলো খুবই স্বাভাবিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সমাজের প্রচলিত অনেক ধারণাকে প্রশ্ন করার পাশাপাশি, এটি দর্শকদের ভিন্নভাবে ভাবতে উৎসাহিত করে।
সিনেমাটি আমাদের দেখায়, ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, নেই কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম। এটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে দর্শক এবং সমালোচক উভয়েরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বর্তমানে, এই চলচ্চিত্রটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
