পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে ‘শহর ধ্বংসকারী’ গ্রহাণু? ভয়ঙ্কর তথ্য!

শুক্রগ্রহের আশেপাশে লুকিয়ে থাকা কিছু গ্রহাণু পৃথিবীর জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে, যা বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক, ভ্যালেরিও কারুব্বার নেতৃত্বে ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, শুক্রের কাছাকাছি থাকা কিছু গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসতে পারে এবং এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, শুক্রের সঙ্গে সহ-কক্ষপথে (co-orbital) অন্তত ২০টি গ্রহাণু রয়েছে, যা পৃথিবীর কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা রাখে। এদের মধ্যে কিছু গ্রহাণু পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এমনকি, একটি গ্রহাণু ‘সিটি-কিলার’-এর মতো ধ্বংস ক্ষমতা রাখে, অর্থাৎ এটি পৃথিবীর কোনো বড় শহরে আঘাত হানলে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে এসব গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে আকৃষ্ট হতে পারে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই বিপদজনক গ্রহাণুগুলোকে সহজে চিহ্নিত করা যায় না।

ফলে, এদের গতিপথ এবং পৃথিবীর সঙ্গে এদের সম্ভাব্য সংঘর্ষ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে ধারণা করা কঠিন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এখনো সৌরজগতের অভ্যন্তরে এমন অনেক গ্রহাণু রয়েছে, যা চিহ্নিত করা যায়নি এবং ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

গ্রহাণুগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও শনাক্ত করার জন্য একটি বিশেষ মহাকাশ অভিযানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষকদের মতে, শুক্রের কাছাকাছি একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা গেলে, সেখানকার সব ‘বিপজ্জনক গ্রহাণু’ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

বর্তমানে, ভেরা রুবিন অবজারভেটরি নামের একটি মানমন্দির (observatory) নির্মাণ করা হচ্ছে, যা ২০২৫ সালের জুলাই মাস থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে। এই মানমন্দিরটি গ্রহাণু শনাক্তকরণে সহায়তা করতে পারে, তবে সূর্যের অবস্থানের কারণে এর পর্যবেক্ষণের সময়সীমা সীমিত হবে।

এই গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা গ্রহাণুগুলো পৃথিবীর জন্য সবসময়ই এক ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। যদি কোনো বড় আকারের গ্রহাণু পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা খায়, তবে তা শুধু একটি শহরের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বিজ্ঞানীরা তাই নিয়মিতভাবে গ্রহাণুগুলোর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাদের পথ পরিবর্তন করার জন্য বিভিন্ন কৌশল নিয়ে কাজ করেন। ভবিষ্যতে, মহাকাশ বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাগুলো আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করতে আরও বেশি সহায়তা করবে।

সবারই এই বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় আগ্রহ বাড়ানো প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *