মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতিকে বহাল রাখতে সিনেটে ভোটাভুটিতে টাই ভাঙলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। বুধবার (তারিখ উল্লেখ করতে হবে) যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটি হয়, যেখানে ট্রাম্পের আমলে আরোপিত শুল্ক (ট্যারিফ) বহাল রাখার পক্ষে ভোট দেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্স।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, চীন, মেক্সিকো ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বিদ্যমান শুল্ক আপাতত বহাল থাকছে।
সিনেটে এই ভোটাভুটির মূল বিষয় ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে আনা একটি প্রস্তাব। প্রস্তাবটি ছিল, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে সৃষ্ট জরুরি অবস্থা বাতিল করার মাধ্যমে শুল্ক কমানো।
প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় (৪৯-৪৯) ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্স তাঁর টাই-ব্রেকিং ভোট দেন। ফলে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায় এবং শুল্ক নীতি অপরিবর্তিত থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কারণ হলো, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, প্রায় সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, গাড়ি এবং মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং চীনের পণ্য আমদানির ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর টিম কেইন এই প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জানালেও, রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট উভয় দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সিনেটরের অনুপস্থিতির কারণে প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সমর্থন পায়নি। রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল অসুস্থতার কারণে ভোট দিতে পারেননি।
ম্যাককনেল শুল্কের বিরোধিতা করে আসছিলেন এবং মনে করেন শুল্ক বৃদ্ধি সবার জন্য একটি কর বৃদ্ধি। ডেমোক্রেট দলের সিনেটর চাক শুমার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের শুল্ক বহাল রাখতে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব বাণিজ্য কাঠামোতে পরিবর্তন এসেছিল।
বিশেষ করে, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি পাওয়ায়, বাংলাদেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতিতে নতুন করে কী পরিবর্তন আসে, সেদিকে এখন সবার নজর। বিশেষ করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন