ভিয়েতনাম বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি দেশটি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো এবং এলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবার অনুমোদন দেওয়া।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের মোকাবিলা করতেই হ্যানয় এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত গত বছর ১২৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে দেশটির সরকার বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে, মঙ্গলবার দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (LNG) ওপর শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করবে।
এছাড়া, গাড়ির শুল্ক ৪৫-৬৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২ শতাংশ এবং ইথানলের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হবে।
দেশটির অর্থমন্ত্রণালয়ের ট্যাক্স পলিসি বিভাগের প্রধান, নুয়েন কুওক হং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
হং আরও জানান, এই শুল্ক হ্রাসের মূল উদ্দেশ্য হলো ভিয়েতনামের বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত করা।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব বিদ্যমান, তবে তাদের মধ্যে কোনো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (free-trade agreement) স্বাক্ষরিত হয়নি।
ভিয়েতনাম এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানি করেনি, তবে তারা তাদের ভবিষ্যৎ এলএনজি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য মার্কিন সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রথম দুটি আগামী জুন মাস থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে।
শুল্ক হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত চলতি মাসের মধ্যেই কার্যকর করা হবে বলে হং জানিয়েছেন।
এছাড়াও, ইথেনের শুল্কও সম্পূর্ণভাবে তুলে নেওয়া হবে এবং চিকেন থাই, বাদাম, আপেল, চেরি ও কাঠের পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো হবে।
অন্যদিকে, বুধবার দেশটির সরকার এক ঘোষণায় জানায়, তারা পরীক্ষামূলকভাবে স্পেসএক্স-এর স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করার অনুমতি দিয়েছে।
তবে এই সেবার মালিকানা সম্পূর্ণরূপে স্পেসএক্সের হাতেই থাকবে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক এড়ানোর জন্য ভিয়েতনামের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে স্টারলিঙ্ক অনুমোদন অন্যতম।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, কিছু দেশকে হয়তো এই শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন