ভিন্নমতের আড্ডায়: আমিষ খাবার নিয়ে দ্বিধায়!

রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা সত্ত্বেও, কীভাবে দুজন নারী, এক তরুণী এবং একজন প্রবীণ, পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে নিজেদের মধ্যে একটি যোগসূত্র তৈরি করতে পেরেছিলেন, সেই গল্প নিয়ে এই প্রতিবেদন।

লন্ডনের ২৭ বছর বয়সী এলা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন নীতি ও যোগাযোগে কাজ করেন। অন্যদিকে, ৬৯ বছর বয়সী রোজী, যিনি শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাতে আলোচনার বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানসিক স্বাস্থ্য এবং অভিবাসনসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আলোচনার শুরুতেই আসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রসঙ্গ। এলা মনে করেন, জলবায়ু সংকট একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংকটগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এবং বিদ্যমান সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

রোজী যদিও মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চেয়ে সামাজিক ন্যায়বিচার বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে মানুষের তেমন কিছুই করার নেই।

আলোচনা এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে, তারা মানসিক স্বাস্থ্য এবং অভিবাসন নিয়েও তাদের মতামত বিনিময় করেন। রোজী অভিবাসনকে সমর্থন করেন, শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তাদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে মত দেন।

এলা যদিও অভিবাসনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন, তবে এর সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অভিবাসন সমর্থন করার ক্ষেত্রে সমাজের কিছু অংশের উদ্বেগকে উপেক্ষা করা উচিত হবে না।

তাদের আলোচনার একটি অংশে, খাবারের মেনু নিয়ে কিছুটা দ্বিধা তৈরি হয়েছিল। এলা যখন রোজীর সাথে একটি রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, তখন রোজী প্রাণী অধিকার নিয়ে কথা বলছিলেন। এমতাবস্থায়, এলা’র কাছে একটি শুকরের মাংসের পদ অর্ডার করতে কিছুটা অস্বস্তি লেগেছিল।

দিনের শেষে, এলা এবং রোজী দুজনেই স্বীকার করেন যে, তাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকলেও, আলোচনার মাধ্যমে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া সম্ভব হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে আসা মানুষের মধ্যেও অনেক বিষয়ে মিল থাকতে পারে।

তারা একে অপরের কথা শুনেছেন এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে নতুন ধারণা পেয়েছেন। এই ধরনের আলোচনা আমাদের সমাজে বিভেদ দূর করতে এবং বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়ক হতে পারে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *