ভয়ংকর কুকুরটির ২ বছরেও হয়নি আশ্রয়, অতঃপর…

একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই বছর কাটানোর পর, অবশেষে ভালোবাসার আশ্রয় খুঁজে পেলো রক্সি নামের একটি ভীতু কুকুর। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের একটি ঘটনা, যা ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মানুষ যে ভালোবাসলে কতটা পরিবর্তন আনা যায়, তারই প্রমাণ এই রক্সি।

রক্সি যখন প্রথম আশ্রয়কেন্দ্রে আসে, তখন সে অপরিচিত মানুষের প্রতি খুবই ভীত ছিল। সেখানকার কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে সে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিল না। এমনকি, কেউ তার কাছে গেলেই দাঁত বের করে, চিৎকার করত। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা স্বেচ্ছাসেবক মাইক বার্নস প্রথমবার রক্সিকে দেখলে এমনটাই মনে হয়েছিল।

বার্নস সবসময় এমন কুকুরদের প্রতি আকৃষ্ট হতেন, যাদের আচরণগত সমস্যা ছিল। তিনি অনুভব করতেন, যারা সমাজের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না, তাদের কোথায় যেন একটা আশ্রয় দরকার। রক্সির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছিল। বার্নস বুঝতে পারছিলেন, এই কুকুরটিরও একটু ভালোবাসার প্রয়োজন।

বার্নস জানান, রক্সির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে তার বেশ কয়েক সপ্তাহ লেগেছিল। প্রথমে কুকুরটি তার কাছে ঘেঁষতেই চাইত না। ধীরে ধীরে বার্নস তাকে খাবার দিতে শুরু করেন, বিশেষ করে চিকেন খুব পছন্দ করত রক্সি। এরপরে, বার্নস রক্সিকে নিয়ে খেলাধুলা করতে শুরু করেন। একসঙ্গে তারা পার্কে ঘুরতে যেত, খেলনা দিয়ে খেলত। বার্নস রক্সিকে ‘ফক্সি রক্সি’ নামে ডাকতেন। তিনি বলেন, রক্সিকে সবসময় হাসিখুশি দেখতেন, কিন্তু মানুষের উপস্থিতিতে সে কেমন যেন সতর্ক হয়ে যেত।

বার্নসের সঙ্গে রক্সির সম্পর্ক গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনুভব করলেন, এই কুকুরটির জন্য কিছু করতে হবে। তিনি রক্সিকে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু সমস্যা ছিল, বার্নস যেখানে থাকতেন, সেখানে কুকুর রাখার অনুমতি ছিল না। তাই তিনি দ্রুত একটি বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করলেন।

বার্নস জানান, তিনি জানতেন, রক্সিকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বের করতে হবে। কারণ, সেখানে তার ভালো থাকার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। অবশেষে, দুই বছর পর তিনি ম্যাসাচুসেটসের মনসনে একটি বাড়ি কেনেন এবং রক্সিকে সেখানে নিয়ে আসেন।

নতুন বাড়িতে আসার পর রক্সির মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। যে রক্সি সবসময় ভয়ে থাকত, সে এখন একেবারে শান্ত। বার্নসের সঙ্গে সবসময় লেগে থাকে। এমনকি, বার্নসের দুটি বিড়াল বন্ধু মিলি ও হ্যারির সঙ্গেও তার দারুণ বন্ধুত্ব হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মীরা জানান, রক্সি আসলে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আকুল ছিল।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, ধৈর্য এবং ভালোবাসার মাধ্যমে একটি ভীতু প্রাণীকেও নতুন জীবন দেওয়া সম্ভব।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *