ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আসন্ন গভর্নর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ডেমোক্রেট প্রার্থী অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গারকে সমর্থন জানাতে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করছে একটি প্রভাবশালী ভেটেরান্স গ্রুপ। “ভোটভেটস” নামের এই সংগঠনটি প্রায় ৫০ কোটি টাকার (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৫ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা) বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে রিপাবলিকান দলের প্রতিপক্ষ উইনসম আর্ল-সিয়ার্সের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছে।
নভেম্বরের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে ভোটারদের মন জয় করতে উভয় দলই এখন কোমর বেঁধে নেমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে অঙ্গরাজ্য পর্যায়ের নির্বাচনগুলো জাতীয় রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই নির্বাচনও এর ব্যতিক্রম নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক হাওয়া কোন দিকে বইছে, তার একটি ইঙ্গিত দিতে পারে।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর থেকে দেশটির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই নির্বাচন সবার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
ভোটভেটস-এর এই প্রচারণার মূল লক্ষ্য হলো, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে রিপাবলিকান পার্টির নীতির সমালোচনা করা।
তাদের অভিযোগ, রিপাবলিকানদের কিছু নীতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলছে।
একটি বিজ্ঞাপনে কেন নামের একজন বিমানবাহিনীর প্রাক্তন সদস্যের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে তিনি জীবনযাত্রার উচ্চ মূল্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভোটভেটস জানিয়েছে, তারা আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত রিচমন্ড এবং নরফোক সহ বিভিন্ন অঞ্চলের ভোটারদের আকৃষ্ট করতে টেলিভিশন, অনলাইন স্ট্রিমিং এবং স্পটিফাই-এর মাধ্যমে এই প্রচারণা চালাবে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী উইনসম আর্ল-সিয়ার্সও পিছিয়ে নেই। তিনিও ডেমোক্রেট প্রার্থী স্প্যানবার্গারের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছেন।
তিনি স্প্যানবার্গারকে ওয়াশিংটনের ‘ইনসাইডার’ হিসেবে চিহ্নিত করে ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন।
এছাড়াও, উভয়ের প্রচারণায় বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়, যেমন – ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক নীতি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে, যা ভোটারদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে পারে।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও এই নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা যাচ্ছে।
সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, স্প্যানবার্গারের হাতে প্রায় ১৫২ কোটি টাকার (বাংলাদেশি মুদ্রায়) নগদ অর্থ রয়েছে, যেখানে আর্ল-সিয়ার্সের হাতে রয়েছে প্রায় ৪৬ কোটি টাকার মতো (বাংলাদেশি মুদ্রায়)।
বিজ্ঞাপন খাতেও স্প্যানবার্গার প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছেন। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, উভয় দলই তাদের প্রচারণায় ততটা গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ভোটারদের কাছে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচন শুধু ভার্জিনিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রাজনীতির একটি ইঙ্গিত দিতে পারে।
তাই সবার চোখ এখন এই নির্বাচনের দিকে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।