ভ্রমণে নিরাপত্তা: বড় শহরগুলোতে ভ্রমণের সময় যে ১০টি সুরক্ষা সরঞ্জাম সাথে রাখা জরুরি
ভ্রমণ সবসময় আনন্দের, কিন্তু নিরাপত্তা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে যখন আপনি অপরিচিত কোনো বড় শহরে যাচ্ছেন, তখন কিছু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ভ্রমণ করেন এমন মানুষের জন্য কিছু অত্যাবশ্যকীয় নিরাপত্তা সরঞ্জামের কথা তুলে ধরা হলো, যা আপনার ভ্রমণকে আরও সুরক্ষিত করতে পারে।
১. ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অ্যালার্ম (Personal Safety Alarm):
বড় শহরে হঠাৎ কোনো বিপদের সম্মুখীন হলে এই ছোট অ্যালার্মটি আপনার জন্য সাহায্যকারী হতে পারে। এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে বিপদ সংকেত দেওয়ার জন্য।
সাধারণত এটি আপনার চাবির রিং বা ব্যাগে রাখা যায়। কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে এর অ্যালার্ম বাজানো হলে আশেপাশের মানুষ সতর্ক হবে এবং সম্ভাব্য বিপদ থেকে আপনি রক্ষা পেতে পারেন।
২. স্মার্ট নিরাপত্তা নেকলেস (Smart Safety Necklace):
যদি আপনি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী হন, তাহলে আপনার জন্য এই নেকলেসটি খুব কাজে আসবে। আপাতদৃষ্টিতে এটি সাধারণ একটি গলার হার, তবে এর ভেতরের বিশেষ প্রযুক্তি আপনাকে বিপদের সময় সাহায্য করতে পারে।
নেকলেসটির বোতাম টিপলে আপনার আগে থেকে সেট করা পরিচিতজনদের কাছে বিপদ সংকেত পৌঁছে যাবে এবং আপনার লোকেশনও তারা জানতে পারবে।
৩. নিজের সুরক্ষায় :
বিদেশ ভ্রমণে গেলে সেখানকার স্থানীয় আইন-কানুন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। অনেক দেশে ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য স্প্রে বহন করা বৈধ, আবার কোনো দেশে এটি নিষিদ্ধ।
তাই ভ্রমণের আগে অবশ্যই এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নিন।
৪. অ্যান্টি-থেফট ব্যাগ (Anti-theft Bag):
বড় শহরে পকেটমার বা ছিনতাইকারীর উপদ্রব প্রায়ই দেখা যায়। এই ধরনের ব্যাগগুলিতে এমন কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে যা চোরদের কাজ কঠিন করে তোলে।
যেমন – ব্যাগগুলিতে সহজে কাটা যায় না এমন স্ট্র্যাপ, চেইন এবং লক ব্যবহার করা হয়।
৫. এয়ারট্যাগ (AirTag):
আপনার লাগেজ বা মূল্যবান জিনিসপত্রের ওপর নজর রাখার জন্য এয়ারট্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলি ছোট আকারের ট্র্যাকিং ডিভাইস, যা সহজেই আপনার ব্যাগে বা অন্য কোনো জিনিসের সাথে রাখা যায়।
এগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার জিনিসপত্রের সঠিক অবস্থান জানতে পারবেন।
৬. গোপন মানিব্যাগ (Hidden Money Belt):
ভ্রমণের সময় আপনার পাসপোর্ট, টাকা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সুরক্ষিত রাখতে এই ধরণের মানিব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এটি আপনার পোশাকের নিচে পরে থাকার কারণে পকেটমারদের পক্ষে তা খুঁজে বের করা কঠিন।
৭. পোর্টেবল ডোর লক (Portable Door Lock):
আপনি যদি কোনো হোটেলে বা অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন, তাহলে এই পোর্টেবল ডোর লক ব্যবহার করে আপনার ঘরকে আরও সুরক্ষিত করতে পারেন।
এটি দরজার সাথে সহজে লাগানো যায় এবং বাইরের কেউ সহজে খুলতে পারে না।
৮. জিপার ক্লিপ (Zipper Clip):
আপনার ব্যাগের জিপার সুরক্ষিত করার জন্য এই ছোট ক্লিপগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো জিপারের সাথে আটকে দিলে পকেটমারদের পক্ষে ব্যাগ খোলা কঠিন হয়ে যায়।
৯. লাগেজ লক (Luggage Lock):
বিমানের ভ্রমণকালে আপনার লাগেজ সুরক্ষিত রাখার জন্য TSA অনুমোদিত লক ব্যবহার করতে পারেন। এই লক আপনার লাগেজ খোলা থেকে রক্ষা করে এবং বিমানবন্দরের কর্মীরা এটি খুলতে পারে।
১০. ডোর স্টপ অ্যালার্ম (Door Stop Alarm):
হোটেল বা গেস্ট হাউসে থাকার সময় রাতের বেলা এই অ্যালার্ম ব্যবহার করলে আপনি বাড়তি নিরাপত্তা পেতে পারেন। দরজার নিচে এটি রাখলে কেউ দরজা খোলার চেষ্টা করলে এটি শব্দ করে আপনাকে সতর্ক করবে।
সতর্কতা: ভ্রমণের সময় সবসময় নিজের চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলুন এবং কোনো প্রকার বিপদের সম্মুখীন হলে দ্রুত কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার