শিরোনাম: ৯টা-৫টা অফিসের চাকরি ছেড়ে ওয়েট্রেসের কাজ, এখন আয়ের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ!
আজকের যুগে, কর্মজীবনের সংজ্ঞা যেন প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে স্মার্ট উপায়ে কাজ করার ধারণা বাড়ছে, যেখানে কাজের ফল পাওয়া যায় বেশি।
এই পরিবর্তনের প্রমাণ পাওয়া যায় আমেরিকার তরুণী জানিয়া জনের জীবনে। তিনি কর্পোরেট অফিসের একটি ভালো বেতনের চাকরি ছেড়ে ওয়েট্রেসের কাজ শুরু করেন। এখন তিনি আগের চেয়ে অনেক কম দিন কাজ করেন, কিন্তু আয় করেন প্রায় তিনগুণ!
জানিয়া জন, যিনি আগে একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে লিজ কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন, তিনি ডেলাওয়্যার থেকে ১৮ বছর বয়সে একা নর্থ ক্যারোলিনায় আসেন। শুরুতে তিনি ভালো বেতনের আশায় একটি কর্পোরেট চাকরি বেছে নিয়েছিলেন।
কিন্তু সেখানে কাজের চাপ আর জীবনযাত্রার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে বেশ বেগ পেতে হতো। একদিকে সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ, অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবনের স্বাধীনতা ছিল সীমিত। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে তিনি বেছে নেন ওয়েট্রেসের কাজ।
জানিয়ার মতে, ওয়েট্রেসের কাজ শুরু করার পর তার জীবন পুরোটাই বদলে গেছে। বর্তমানে তিনি সপ্তাহে মাত্র তিন থেকে চার দিন কাজ করেন।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, তিনি এখন আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি, এমনকি প্রায় তিনগুণ বেশি আয় করেন! তার কথায়, এখন তিনি অনেক বেশি স্বাধীনতা অনুভব করেন এবং নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন।
ওয়েট্রেসের কাজ বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, একদিকে যেমন তিনি ভালো টিপস পান, তেমনি এই কাজের সময়টা তার জন্য অনেক বেশি উপযুক্ত। তিনি জানান, আগে অফিসের পাশাপাশি অন্য সময়ে কাজ করে তিনি শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন।
কিন্তু এখন, তিনি কম সময়ে বেশি আয় করতে পারছেন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, জানিয়া তার এই অভিজ্ঞতা টিকটকের মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করেন। কিভাবে তিনি স্বল্প খরচে জীবন যাপন করেন, সে সম্পর্কে বিভিন্ন টিপস দেন তিনি।
যেমন, বিদ্যুতের বিল কমাতে এনার্জি-সেভিং বাল্ব ব্যবহার করা এবং একসঙ্গে বেশি জিনিস কিনে খরচ কমানোর মতো বিষয়গুলো তিনি নিয়মিতভাবে তুলে ধরেন। এছাড়াও, কিভাবে ওয়েট্রেসের কাজ করে বেশি টিপস পাওয়া যায়, সেই বিষয়েও তিনি মূল্যবান পরামর্শ দেন।
তবে, এই পরিবর্তন সব সময় সহজ ছিল না। জানিয়া স্বীকার করেন, ওয়েট্রেসের কাজে স্বাস্থ্য বীমা বা অবসরকালীন ভাতার মতো সুবিধাগুলো নেই।
তবে তিনি নিজের সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেন।
জানিয়া জন মনে করেন, জীবনের লক্ষ্য হল প্রতিনিয়ত নতুন কিছু চেষ্টা করা। তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যদি বর্তমান কাজ ভালো না লাগে, তবে সবকিছু চেষ্টা করে দেখুন।
একটি চাকরির ওপর নির্ভর না করে, নিজের জন্য সঠিক পথ খুঁজে বের করুন।”
জানিয়ার এই গল্পটি আমাদের জন্য একটি উদাহরণ হতে পারে। এটি প্রমাণ করে, প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়েও একজন মানুষ তার জীবনকে আরও সুন্দর ও সফল করতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল