ডাইনোসরদের জগতে আবার ফিরছে বিবিসি-র জনপ্রিয় সিরিজ ‘ওয়াকিং উইথ ডাইনোসরস’। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার সম্প্রচারিত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ কোটি দর্শক এই সিরিজটি উপভোগ করেছেন। এবার আধুনিক প্রযুক্তি এবং নতুন বৈজ্ঞানিক তথ্যের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এই সিরিজের নতুন সংস্করণ, যা দর্শকদের জন্য এক আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে চলেছে।
নতুন সিরিজে ডাইনোসরদের দেখা যাবে আরও বাস্তবসম্মত রূপে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পুরনো সিরিজে ডাইনোসরদের যে চেহারা দেখানো হয়েছিল, নতুন সিরিজে তাদের গঠনে আনা হয়েছে অনেক পরিবর্তন। যেমন, টি-রেক্স বা টাইরানোসরাস রেক্স-এর ঠোঁট ছিল, যা আগে দেখানো হয়নি।
শুধু তাই নয়, তাদের চামড়ার রঙ এবং পালকের ক্ষেত্রেও এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জীবাশ্ম পরীক্ষা করে ডাইনোসরদের সম্পর্কে নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন, যা এই সিরিজে যুক্ত করা হয়েছে।
কানাডার আলবার্টায় অবস্থিত পাইপস্টোন ক্রিক বোনবেডে (Pipestone Creek Bonebed) খননকার্য চালিয়ে বিজ্ঞানীরা নতুন এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছেন। এই স্থানটিতে প্রতি বর্গমিটারে প্রায় ২০০টি করে ডাইনোসরের হাড় পাওয়া গেছে। এই খননকার্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কানাডার শীর্ষস্থানীয় জীবাশ্মবিদ এমিলি বামফোর্থ।
তিনি জানিয়েছেন, ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা অগ্নিকাণ্ডের কারণে এখানে অনেক তৃণভোজী ডাইনোসরের কঙ্কাল জমা হয়েছিল।
সিরিজটির নির্মাতারা দর্শকদের জন্য ডাইনোসরদের জীবনযাত্রা আরও ভালোভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। প্রতিটি পর্বে একটি নির্দিষ্ট ডাইনোসর প্রজাতিকে কেন্দ্র করে গল্প তৈরি করা হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, স্পিনোসোরাস নামক বৃহত্তম মাংসাশী ডাইনোসরের জীবন এবং একটি প্রেমকাতর তৃণভোজী লুসোটাইটানের গল্প দর্শকদের মন জয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তিগত দিক থেকেও এই সিরিজটি অনেক উন্নত। কম্পিউটার-জেনারেটেড ইমেজের (CGI) মাধ্যমে ডাইনোসরদের জীবন্ত করে তোলার পাশাপাশি, তাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ফুটিয়ে তোলার জন্য বাস্তব লোকেশন ব্যবহার করা হয়েছে।
এমনকি, জলের মধ্যে ডাইনোসরদের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য বিশাল আকারের মডেল তৈরি করা হয়েছে।
বিবিসি-র এই নতুন সিরিজটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। পুরনো সিরিজের স্মৃতিচারণ এবং নতুন প্রজন্মের দর্শকদের জন্য ডাইনোসরদের সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্য পরিবেশন—সব মিলিয়ে সিরিজটি যে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে, তা বলাই বাহুল্য।
এই সিরিজটি শুধু বিনোদনই দেবে না, বরং বিজ্ঞান ও জীবাশ্মবিদ্যা সম্পর্কে আগ্রহীদের আরও বেশি উৎসাহিত করবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান